নিজস্ব প্রতিরেদক ॥
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন পরিবারের মাঝে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের চতুর্থ পর্যায়ে দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে চাঁদপুরে প্রেস ব্রিফিং করেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।
গতকাল ৮ আগষ্ট মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চাঁদপুর জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানানো হয়, চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৭০ জন হাজীগঞ্জ উপজেলা ৩৫, কচুয়া ৩৮, মতলব দক্ষিণ ১৫, জেলার মোট ১৫৮ পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য জমিসহ ঘর প্রদান করা হবে। এছাড়াও মতলব দক্ষিণ উপজেলা ও কচুয়া উপজেলাকে এ পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হবে।
সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, চাঁদপুর জেলায় মোট ১৪৩২ টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মধ্যে মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ১৯৪টি এবং কচুয়া উপজেলায় ১৩টি হালনাগাদকৃত ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের সকলকে পুনর্বাসন করায় আপাতত এ দুটি উপজেলায় কোন ভূমিহীন নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী মতলব দক্ষিণ ও কচুয়া উপজেলাকে এ পর্যায়ে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন।
তিনি আরও বলেন, ৯ আগস্ট (আজ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ৪র্থ পর্যায়ের (২য় ধাপ) ২২,১০১ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন। সারাদেশে ১ম পর্যায়ে ৬৩,১৯৯, ২য় পর্যায়ে ৫৩,৩ ও ৩য় পর্যায়ে ৫৯,১৩৩, ৪র্থ পর্যায়ে (১ম ধাপ) ৩৯,৩৬৫ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান করা হয়েছে। ১ম, ২য়,৩য় ও ৪র্থ পর্যায়ে হস্তান্তরিত গৃহের সংখ্যা ২,৫৫,১৯২ টি।
কামরুল হাসান বলেন, সর্বশেষ হালনাগাদকৃত তালিকা অনুযায়ী চাঁদপুর জেলার ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এর সংখ্যা ১৪৩২ টি। ১ম পর্যায়ে একক গৃহের মাধ্যমে ১৩৫ টি পরিবারকে, ২য় পর্যায়ে ১০৯টি পরিবারকে, ৩য় পর্যায়ে ১২৩ টি পরিবারকে এবং ৪র্থ পর্যায়ে (১ম ধাপে) ৫৩ টি অর্থাৎ ৪ পর্যায়ে সর্বমোট ৪২০ টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে, ব্যারাকে ৩৯৯ টি পরিবার, বাখরপুর গুচ্ছগ্রামে-০৯ টি, বাংলাদেশ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন কর্তৃক ০২ টি, উপজেলা পরিষদ, চাঁদপুর সদর কর্তৃক- ০৪ টি অর্থাৎ মোট ৮৩৪ টি পরিবারকে ইতোমধ্যে পুনর্বাসন করা হয়েছে এবং ৪র্থ পর্যায়ে বরাদ্দপ্রাপ্ত ২১১ টি গৃহের মধ্যে ৫৩ টি গৃহ ইতোমধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে এবং ১৫৮ টি গৃহ উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
এ পর্যায়ে উদ্বোধনযোগ্য ১৫৮ টি গৃহের মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৭০ টি, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৩৫ টি, কচুয়া উপজেলায় ৩৮ টি, মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ১৫ টি গৃহ সম্পূর্নরূপে উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, এ সকল পরিবারকে এক টাকা সেলামীতে দুই শতক জমি বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। উক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রেশন, নামজারী ও জমাখারিজ খতিয়ান সুজন, সনদপত্র প্রদানসহ সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক কবুলিয়ত দলিলের জন্য পরিবার প্রতি ২৫৮ টাকা, নামজারী ও খতিয়ান প্রদান বাবদ ১১৭০ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এতে নামজারী, জমি রেজিস্ট্রেশন ও আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ তাদের কোন টাকা ব্যয় করতে হয়না। প্রতিটি একক গৃহের আয়তন ৪০০ বর্গফুট। দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা গৃহে একটি টয়লেট, একটি রান্নার কক্ষ ও একটি ইউটিলিটি স্পেস রয়েছে। ৯ আগস্ট উদ্বোধনযোগ্য ১৫৮ টি গৃহের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ২৬ টি ও কচুয়া উপজেলার ০৪ টি পরিবারকে অবৈধ দখল উচ্ছেদের মাধ্যমে খাস জমিতে পুনর্বাসন করা হচ্ছে এবং অবশিষ্ট ১২৮ টি পরিবারকে জমি ক্রয়ের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন , অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোসাম্মৎ রাশেদা আক্তার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি এএইচএম আহসান উল্যাহ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন, সাবেক সভাপতি শহীদ পাটওয়ারী, ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সিনিয়র সহ-সভাপতি রহিম বাদশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শান্ত, সাংবাদিক আবদুল আউয়াল রুবেল, কাদের পলাশসহ জাতীয় ও স্থানীয় গনমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য: মুজিববর্ষে, “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিইন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের ৪র্থ পর্যায়ের (২য় ধাপ) শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে চাঁদপুর জেলার ইলেকট্রনিক ও প্রিন্টমিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দের সাথে প্রেস ব্রিফিং ও মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়।