নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
অটো রিক্সা চালকের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যার পর আটোরিক্সা ছিনিয়ে নিয়ে যায় মো. শরীফ মাঝি (২৪) নামে এক যুবক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়।
গ্রেপ্তারকৃত মো. শরীফ মাঝি (২৪) চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজারহাট এলাকার লতিফ মাঝির বাড়ীর হাবিবুর রহমান মাঝির ছেলে। হত্যার শিকার অটো রিক্সা চালক দুলাল হাওলাদার(৫৩) ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মৃত রশিদ হাওলাদারের ছেলে। স্ত্রী-স্বজনদের নিয়ে শহরের গুনরাজদী এলাকার কাউসারের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন দুলাল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় জানান, গত ১৪ সেপ্টম্বর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকায় একটি খাল থেকে দুলালে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনার পর হতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। দুলাল হাওলাদারকে হত্যার আগে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে রঘুনাথপুর জনকল্যাণ বাজারে যাওয়ার জন্য রিক্সাটি ভাড়া করে শরীফ। চাঁদপুর লঞ্চঘাটের সিসি ক্যামেরা ধরা পড়ে আসামী শরীফ মাঝি চাঁদপুর লঞ্চঘাটে চালক দুলাল হাওলাদারের অটো রিক্সায় উঠতে । তারা সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের ইচলী এলাকার ইয়াছিনের বেকারী থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, আসামী শরীফ মাঝি গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১১ টায় চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে দুলালকে বয়স্ক দেখে তার অটো রিক্সাটি চুরি করার উদ্দেশ্যে রঘুনাথপুর জনকল্যাণ বাজারে যাওয়ার জন্য রিক্সাটি ভাড়া করে। শরীফ অটো রিক্সাযোগে জনকল্যাণ বাজারে যাওয়ার পূর্বে মসজিদের পাশ হতে একটি ইট নিয়ে রিক্সায় উঠে। দুলাল রিক্সা নিয়ে সামনের দিকে যেতে না চাইলে শরীফ বলে সামনে স্থানীয় ইয়াকুব আলী ব্যাপারীর বাড়ির সামনে গিয়ে নেমে যাবে। পরে দুলাল তার অটো রিক্সা নিয়ে ইয়াকুব আলীর বাড়ীর দিকে যেতে থাকে। দুলাল ইয়াকুব আলীর বাড়ীর নির্জন জায়গায় পৌঁছলে আসামী শরীফ রিক্সা থামাতে বলে। দুলাল রিক্সা থামানোর সাথে সাথে শরীফ ওই ইট দিয়ে তার মাথার পিছনে ২ বার আঘাত করলে সে রিক্সা হতে পড়ে যায়। তখন আসামী শরীফ রিক্সা হতে নেমে দুলালের মাথায় আরও দুই বার আঘাত করে মৃত বলে মনে করে পাশ্ববর্তী জলাশয়ে ফেলে যায়। শরীফ অটো রিক্সাটি নিয়ে জনকল্যাণ বাজার হয়ে তার বাড়িতে চলে যায়। সে রিক্সাটি আলাদা করে খুলে ফেলে। অটো রিক্সার ৪টি ব্যাটারী বাগানের এক পাশে লুকিয়ে রাখে এবং রিক্সার আলাদা করা অংশ গুলো বাড়ীর সামনে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। আমরা রিক্সাটির কয়েকটি যন্ত্রাংশ উদ্ধার করেছি। তাকে বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।