মেঘনা বার্তা ডেস্ক ॥
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন দেবপুর এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পাঁচ দুধর্ষ ডাকাত গ্রেফতার এবং বুড়িচং থানার সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব-১১।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন শাহদৌলতপুর গ্রামের অটোরিক্সাচালক সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) অটোরিক্সা নিয়ে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে নিজ বাড়ী হতে বের হন। পরবর্তীতে অন্যান্য দিনের ন্যায় রাতের বেলায় তিনি বাড়িতে ফিরে না আসলে তার ছেলে অর্পন দেবনাথ ২৬ সেপ্টেম্বর বুড়িচং থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী দায়ের করেন, যার সাধারণ ডায়েরী নং-১২১৬, তারিখ-২৬/০৯/২০২৩ইং।
পরবর্তীতে ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে বুড়িচং থানাধীন রামপুর এলাকার কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের পাশে নিখোঁজ সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) এর মৃতদেহ পানিতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে অর্পন দেবনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-৩৭, তারিখ-২৯/০৯/২০২৩, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দন্ডবিধি।
র্যাব-১১ এর আভিযানিক দল রবিবার দুপুরে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন দেবপুর এলাকা হতে অটোরিক্সা চালক সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামী চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার পনশাহী গ্রামের আলী আহম্মেদের ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান (৩৫) ও গোহাট গ্রামের আব্দুর রবের ছেলে মোঃ মোখলেছ (৩৭), কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার বড়ইয়াকুড়ি গ্রামের মোঃ হারুনুর রশিদের ছেলে মোঃ নুর ইসলাম (২৫), একই গ্রামের মৃত ইসমাইল মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া (২৩), কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার বারেরা গ্রামের মৃত মেজামের ছেলে মোঃ মিজানকে (২৪) গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ওই সময় তাদের নিকট হতে ১ টি ছোরা, ১টি চাকু, ১ টি ক্রিজ, ১ টি স্টীলের পাইপ ও ১ টি পাইপ গিয়ার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা একটি সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্র। প্রায়শই তারা ডাকাতির লক্ষ্যে একত্রিত হয় এবং সুযোগ বুঝে ডাকাতি করে থাকে। এছাড়াও সনজিত চন্দ্র দেবনাথ (৫৮) হত্যার বিষয়ে তারা জানায়, গেল ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে আসামীরা একটি অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। এর ধারাবাহিকতায় পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ঐ দিন রাতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে কংসনগর যাওয়ার কথা বলে ভিকটিম সনজিত চন্দ্র দেবনাথের অটোরিক্সাটি ভাড়া করে এবং সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মৃতদেহ পানিতে ফেলে অটোরিক্সাটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকালে গ্রেফতারকৃত আসামী নুর ইসলামের নিকট হতে নিহত অটোরিক্সাচালকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয় এবং আসামীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী কচুয়ার বেলতলা বাজারে অবস্থিত আসামী মোঃ মিজানুর রহমানের অটোরিক্সার গ্যারেজ হতে ভিকটিমের অটোরিক্সাটি উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১১ এর উপ-পরিচালক এ কে এম মুনিরুল আলম জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।