করোনায় উচ্চ ঝুঁকিতে ঢাকাসহ ১২ জেলা ॥ গ্রিন জোনে এখনো চাঁদপুর

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা বিবেচনায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ ১২ জেলাকে উচ্চ ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে গ্রিন জোনে থাকা জেলার মধ্যে আছে চাঁদপুর।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ১০ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে জেলাগুলোকে তারা উচ্চ, মাঝারি ও স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ভাগ করে যথাক্রমে রেড বা লাল, ইয়েলো বা হলুদ ও গ্রিন বা সবুজ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২০ শতাংশের বেশি হলে তা লাল, শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের বেশি হলে অধিকতর গাঢ় লাল রঙে চিহ্নিত করছে অধিদপ্তর।

বুধবার থেকে গত এক সপ্তাহে ঢাকায় করোনাভাইরাসের ৬২ হাজার ২১টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৭ হাজার ৪৩৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাতে শনাক্তের হার দাঁড়াচ্ছে ২৮ দশমিক ১১ শতাংশ। এ কারণে ঢাকাকে সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

অধিদপ্তরের হিসাবে, গত কয়েক দিন ধরে সারাদেশে মোট কোভিড-১৯ আক্রান্তের ৮০ শতাংশের কাছাকাছি রোগী পাওয়া যাচ্ছে ঢাকায়। মঙ্গলবার সারাদেশে ৮ হাজার ৪০৭ জনের কোভিড শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ৬ হাজার ৫৯৭ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৭৮ শতাংশের বেশি।

শনাক্তের হার বিবেচনায় দেশের জেলাগুলোকে যে তিন ভাগে ভাগ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, তার মধ্যে উচ্চ ঝুঁকিতে আছে ১২ জেলা। মাঝারি ঝুঁকিতে রয়েছে ৩১ জেলা এবং বাকি জেলাগুলো স্বল্প ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

উচ্চ ঝুঁকির জেলায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার গড়ে ১০ থেকে ১৯ শতাংশ। মাঝারি ঝুঁকির তালিকায় থাকা জেলাগুলোতে এই হার ৫ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশ। আর যেসব জেলায় শনাক্ত ৫ শতাংশের কম, সেগুলো কম ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে।

অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ঢাকা ছাড়া উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রাঙামাটি, বগুড়া, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, যশোর, লালমনিরহাট, গাজীপুর, পঞ্চগড় এবং খাগড়াছড়ি জেলা রয়েছে উচ্চ ঝুঁকির রেড জোনে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

ইয়েলো জোন অর্থাৎ মধ্যম পর্যায়ের ঝুঁকিতে থাকা শেরপুর, সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ, ফেনী, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, সিলেট, নাটোর, কক্সবাজার, ঠাকুরগাঁও, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নওগাঁ, বরিশাল, মাগুরা, জয়পুরহাট, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, পটুয়ালী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সাতক্ষীরা, লক্ষ্মীপুর, পিরোজপুর, বাগেরহাট, শরীয়পুর ও নড়াইলে শনাক্তের হার ৫ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশ।

গ্রিন জোনে থাকা জেলার মধ্যে আছে কুমিল্লা, চাঁদপুর, পাবনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, ভোলা, নেত্রকোনা, গাইবান্ধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বরগুনা, চুয়াডাঙ্গা, নীলফামারী ও মেহেরপুর। এসব জেলার শনাক্তের হার শূন্য থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে।

বান্দরবান জেলায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ১২ শতাংশ হলেও একে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়নি, কারণ এ জেলায় খুব কম সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্তের এই হার পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে ৬১ জেলায় শনাক্তের হার আগের সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে, কমেছে তিন জেলায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৫ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে ঢাকায়, চট্টগ্রামে এই হার ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় ১২ দশমিক ৫৮ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে রাঙামাটি জেলায়।

Loading

শেয়ার করুন: