নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
চাঁদপুরে অনূর্ধ্ব ১৯ আইজিপি কাপ জাতীয় যুব কাবাডি প্রতিযোগিতা -২০২১ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) সকাল দশটায় চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জেলা পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি অঞ্জনা খান মজলিশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, করোনার কারণে এতদিন আমরা খেলাধুলার আয়োজন করতে পারিনি। সুন্দর একটি পরিবেশের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় খেলা কাবাডি প্রতিযোগিতা হচ্ছে। জেলা পুলিশ প্রশাসন এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এর মাধ্যমে আমরা ক্রীড়া উৎসবের ডান প্রান্তে পৌঁছে গেছি।
তিনি বলেন, আগামী ১৬ই ডিসেম্বর বিজপডর পঞ্চাশ বছর উদযাপিত হবে। তাই নভেম্বর মাস থেকে আমাদের ক্রীড়া উৎসব শুরু হয়ে গেছে। কাবাডির পর আমরা বঙ্গবন্ধুর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আয়োজন করব। সেখানে ক্রিকেটের একটি উৎসব শুরু হবে।
এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় শুরু হচ্ছে নবান্ন উৎসব এবং সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও নাটক। স্বাধীনতার বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে আমরা এখন সুন্দর একটি সময়ে অবস্থান করছি। এখন আমাদের সংক্রমণের হার অনেক কমে গেছে অনেকটাই স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছি।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, সুস্থ থাকার জন্য এবং সুস্থ শরীর মন গঠনের জন্য খেলাধুলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। খেলাধুলা করলে যেমন শরীর সুস্থ থাকে, তেমনি মানসিক জরাতাও কমে যায়।
অনুষ্ঠানে টুর্নামেন্ট কমিটির সভাপতি জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদের সভাপতিত্বে ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডঃ মোঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেডকোয়াটার মোঃ মঈনুল হোসেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোষাধক্ষ্য সুভাষ চন্দ্র রায়, জেলা ক্রীড়া অফিসার মোঃ তারিকুল ইসলাম, চাঁদপুর জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য তমাল কুমার ঘোষ, শাহ্ তালুকদার, তপন চন্দ্র, শরীফ আশরাফুল হক, সন্তোষ রায়, আবুল কালাম আজাদ, নুরুন্নবী নোমানসহ চাঁদপুর জেলার ৮ থানার অফিসার ইনচার্জগণ এবং সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার, ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তাগণ ও কাবাডি খেলোয়াড় ও ক্রীড়ামোদী দর্শকবৃন্দ।
টুর্নামেন্ট কমিটির সভাপতি ও পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম-বার তার বক্তব্যে বলেন, জেলা পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতা হচ্ছে। আমরা এখান থেকে ভালো খেলোয়াড় বাছাই করে একটি শক্তিশালী টিম গঠন করবো। যারা বিভাগীয় পর্যায়ে খেলে উত্তীর্ণ হতে পারবে এবং জাতীয় পর্যায়ে খেলার সুযোগ সৃস্টি হবে।
তিনি আরো বলেন, কাবাডি জাতীয় একটি খেলা। অন্যান্য খেলার সাথে এই খেলাটি অনেকটা আড়াল হয়ে গেছে। কিন্তু ছোটবেলায় আমরা অনেকেই হাডুডু বা কাবাডি খেলেছি বা দেখেছি। এই খেলাটি যাতে আরো বেশি করে চর্চা হয়,আমি এ জেলায় যোগদানের পর কাবাডি টুর্নামেন্ট করার আয়োজন করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা মোবাইল মুখী, মাদকাসক্তি ও কিশোর গ্যাংসহ আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক অন্যান্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তাদেরকে এসব থেকে দুরে রাখতে এবং এ অপরাধগুলো কমানোর জন্য ছেলে মেয়েদের মাঠমুখী করাই এখন জরুরী। করোনার জন্য এতদিন আমরা খেলাধুলার আয়োজন করতে পারিনি। চাঁদপুর স্টেডিয়াম বিভিন্ন খেলাধুলার মাধ্যমে আবার সরগরম এ প্রত্যাশা করেন।
এ প্রতিযোগিতায় চাঁদপুর জেলার ৮টি থানা কাবাডি দল অংশগ্রহণ করে। উদ্বোধনী দিন ৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
শাহরাস্তি উপজেলা ৩৭-৭ পয়েন্টের বড় ব্যবধানে মতলব উত্তরকে, হাইমচর উপজেলা ২৭- ১২ পয়েন্টে মতলব দক্ষিণকে, ফরিদগঞ্জ উপজেলা ২৭-২৫ পয়েন্টে কচুয়াকে এবং চাঁদপুর সদর ৪৬-২৬ পয়েন্টে হাজিগঞ্জ উপজেলা দলকে পরাজিত করে।
এ জয়ের ফলে শাহারাস্তি হাইমচর ফরিদগঞ্জ ও চাঁদপুর সদর উপজেলা সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছে।
২৪ নভেম্বর বুধবার সকালে প্রতিযোগিতার দুটি সেমিফাইনাল এবং বিকাল ৩টায় ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথম সেমিফাইনালে শাহরাস্তি ফরিদগঞ্জ উপজেলার মুখোমুখি হবে। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে হাইমচর উপজেলা লড়বে চাঁদপুর সদর উপজেলার সাথে।
কাবাডি প্রতিযোগিতার খেলাগুলো পরিচালনা করছেন বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন থেকে আগত রেফারি নাজির আহমেদ বাদল। তাঁকে সহযোগিতা করেন সিরাজুল ইসলাম, সায়মন, বাদল বেপারী ও ক্রীড়া সংস্থার অফিস কর্মকর্তা দিলীপ।
উল্লেখ্য,চাঁদপুরের আইজিপি কাপ যুব কাবাডির এ প্রতিযোগিতার আয়োজন ও ব্যবস্থাপনা করছে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা।