জেলা প্রতিনিধি ,চাঁদপুর ॥
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ভয়াল রূপ ধারণ করে স্থলভাগের দিকে ধেয়ে আসতে শুরু করেছে। যার প্রভাব চাঁদপুরে পড়তে শুরু করেছে। আর এ জন্য চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধে ৪৬৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ মোকাবেলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ঘুর্ণিঝড় ‘দানা’র পূর্ণ প্রভাব চাঁদপুরে এখনো দেখা না দিলেও পরবর্তী এর প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার প্রেক্ষিতে নদী তীরবর্তী সদর, হাইমচর, মতলব উত্তর উপজেলাসহ চরাঞ্চলে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সাথে এসব এলাকার ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স দপ্তর, জনপ্রতিনিধি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীদেরকে প্রস্তুত থাকার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগকালীন সময়ে এসব এলাকার সরকারি কর্মকর্তারা নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করবেন। দুর্যোগকালীন সময়ে চরাঞ্চলে কোন দুর্ঘটনা হলে তাৎক্ষণিক তাদের জন্য উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত থাকবে। সিভিল সার্জনকে অনুরোধ করে তিনি বলেন, এ সময় যেন প্রত্যেকটি স্বাস্থসেবা কেন্দ্রের চিকিৎক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা উপস্থিত থাকেন।
ঘূর্ণিঝড়কালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৯৫ মেট্টিক টন (জিআর) চাল, পর্যাপ্ত পরিমান নগদ অর্থ, শিশু খাদ্য, গো খাদ্য এবং শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও নদী উপকূলীয় এলাকায় ৪৪০টি ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ১৯টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ও ৫টি মাটির কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মোঃ শোয়েব জানান, চাঁদপুর উপকূলীয় এলাকার আওতায় থাকায় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র কারণে ইতোমধ্যে চাঁদপুরে দমকা হাওয়াসহ থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত চলমান থাকবে।
সভায় স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. গোলাম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ নুর আলম দীন, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. শাফায়েত আহমেদ সিদ্দিকী, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম, চাঁদপুর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু মুসা মোহাম্মদ ফয়সাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইয়াসির আরাফাত, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সৈকত, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. হেদায়েত উল্লাহ, চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ্ মো. শোয়েব প্রমুখ।
সভায় জেলার অন্যান্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।