
মতলব উত্তর ব্যুরো :
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় মতলব উত্তর উপজেলার মো. শাহাদাৎ হোসেন ওরফে রনি (৩৬) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দাউদকান্দি মডেল থানার পুলিশ বুধবার বিকেলে উপজেলার ভিকতলা গ্রামের একটি বাড়ির তালাবদ্ধ কক্ষের দরজা ভেঙে লাশটি উদ্ধার করে। শাহাদাৎ স্থানীয় ইলিয়টগঞ্জ বাজারের হালুয়া-রুটির ব্যবসা করতেন।
নিহত শাহাদাৎ হোসেনের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি গ্রামে। তিনি দাউদকান্দির ভিকতলা গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়া থেকে ইলিয়টগঞ্জ বাজারে ব্যবসা করতেন।
মৃত মো. শাহাদাৎ হোসেন ওরফে রনির সংসারে রয়েছে পিতা, মাতা, স্ত্রী, ২৩ মাস বয়সের একটি কনে সন্তান ও ১৪ দিনের একটি ছেলে রয়েছে। ওই দিনেই মরহুমের বোন ফারজানা আক্তার বাদী হয়ে দাউদকান্দি থানায় মামলা দায়ের করে। মৃত্যুর পর থেকেইে শাহাদাৎ হোসেনের ওরফে রনির কর্মচারী খুনি রনি পলাতক থাকলে ও শেষ রক্ষা হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোর রাতে মতলব উত্তরের রামদাশপুর এলাকা থেকে দাউদকান্দি থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ৩টার সময় দাউদকান্দি থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে মতলব উত্তরের ফরাজীকান্দি গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায় মো. শাহাদাৎ হোসেন ওরফে রনি কফিনবন্দি লাশ। তাকে একনজর দেখতে অ্যাম্বুলেন্সের পিছু ছুটে আসে হাজারো মানুষ। তখন বাড়িজুড়ে আহাজারি আর কান্নার রোল। বড় ছেলেকে হারিয়ে বুক চাপড়ে কাঁদতে থাকেন মা রহিমা বেগম, বাবা আসলাম রাঢ়ী, বোন ও প্রতিবেশীদের আহাজারিতে নেমে আসে শোকের আবহ। বাদ আছর ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্য বলেন, গত সোমবার সকালেও ব্যবসায়ী শাহাদাৎ বাজারের হালুয়া-রুটি বিক্রি করেন। এর পর থেকে তাঁকে আর দেখা যায়নি। বাড়ির মালিক আবদুর রাজ্জাক আজ সকাল আটটার দিকে একটি তালাবদ্ধ কক্ষের ভেতরে তাঁর লাশটি দেখতে পান। খবর পেয়ে দাউদকান্দি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবসায়ী লাশটি উদ্ধার করেন।
শাহাদাৎ হোসেনের বাবা আছলাম রাঢ়ী এলাকায় ভাড়া থেকে হালুয়া রুটি বিক্রি করতেন। শাহাদাৎ হোসেনও বাবার সঙ্গে প্রায় ১৫ বছর ধরে এ এলাকায় হালুয়া রুটি বিক্রি করেছেন। এক বছর আগে তাঁর বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। পরে তিনি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার রনি নামের এক যুবককে সঙ্গে নিয়ে হালুয়ারুটি বিক্রি করতেন। শাহাদাৎ হোসেনের সহযোগী রনি পলাতক আছেন।
দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী বলেন, মামলায় উল্লেখিত এজাহারভুক্ত আসামীকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত আসামী কোর্টে ১৬৪ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।