
মেঘনা বার্তা ডেস্ক ॥
দেশের অভ্যন্তরীন নৌরুটে পাইলট ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরনের পন্যবাহী নৌযান। ফলে এই রুটে নৌ যান চলাচলে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সৃষ্টি হচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির। এতে ব্যহত হচ্ছে নির্বিঘ্নে নৌ যোগাযোগ বা চলাচলা ব্যবস্থা।
বিআইডব্লিউটিএ জানায়, চাঁদপুর অঞ্চলের পদ্মা, মেঘনা, ধনাগোদা, ডাকাতিয়া নদী মিলে সাড়ে ৮শ ৬০ কিলোমিটার নদী পথ রয়েছে। নৌযান আইন অনুযায়ী পাইলট ছাড়া মালবাহী লাইটার জাহাজ, বাল্কহেডসহ বিভিন্ন নৌযান চলাচলের কোনো সুয়োগই নেই। অথচ এ অঞ্চলে পাইলট ছাড়া শত শত নৌযান চলাচল করছে। ফলে বাড়ছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। সৃষ্টি হচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির। আর এতে ব্যহত হচ্ছে নির্বিঘ্নে নৌযোগাযোগ বা চলাচলা ব্যবস্থা।
অন্যদিকে এই রুটে নৌযানগুলোতে পাইলট সার্ভিস না থাকায় প্রতি বছর সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। সঠিক নিয়মে পাইলসহ নৌ যান চলাচল করলে সরকার বছরে কোটি টাকার ওপরে আয় পেতো।
উল্লেখ্য চট্টগ্রাম ও খুলনা বন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় নৌ পথে পণ্য পরিবহনে যে কয়টি রুট রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম চাঁদপুরের মধ্য ব-দ্বীপ অঞ্চল। আইন অমান্য করে এই রুট দিয়ে প্রতিদিন নানা কৌশলে পাইলট ছাড়াই নির্বিঘ্নে শত শত নৌ যান চলাচল করছে। অনেকটা নিবিঘ্নে। নিজেদের মতো করে খাম -খেয়েলি ভাবে নৌ যান চালাচ্ছে অসাধু জাহাজ মালিক ও মাস্টাররা। এতে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি ভাবর ঝুঁকি বাড়ছে পণ্য পরিবহনে।
পাইলট আব্দুর রাজ্জাক জানান, নৌ পথের কোন চ্যানেলে কি পরিমান পানি আছে, নাব্যতা কেমন তা শুধু আমরা পাইলটরাই জানি। পন্যাবাহী নৌযানে যখন পাইলট থাকে তখন ওই নৌযান চর -ডুবোচরে আটকা পড়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না। সঠিক নিয়মে নিরাপদে পণ্যবাহী নৌযান তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। আর যে সকল নৌযান পাইলট ছাড়া চলাচল করে তাদের ঝুঁকি থাকে। প্রায় সময় চর ডুব চরে আটকা পড়ে। নিরাপদ স্থান ছাড়া অনিরাপদ জায়গায় নোঙর করে বিশ্রাম নেয়। এতে ডাকাতি কিংবা চাঁদাবাজদের দ্বারা আক্রন্ত হওয়ার আশংকা থাকে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরী নৌ পরিবহন কতৃপক্ষ চাঁদপুর জানান, সরকারি পাইলট ফি নামমাত্র মূল্যে দেয়া হয়। প্রতি ৮ ঘন্টার জন্যে একজন পাইলটের সরকারি ফি মাত্র ৫শ টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে একটি পণ্যবাহী জাহাজ চাঁদপুর নৌ চ্যানেল হয়ে ঢাকা কিংবা নারায়নগঞ্জ গেলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ থেকে পাইলট সহায়তা নেয়া হলে ফি বাবদ দিতে হয় তিন থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। সরকারি এই ফি এর বিনিময়ে পাইলট রুট দেখিয়ে নিরপাদে নৌ যানকে গন্তব্যে পৌছানোর ব্যবস্থা করেন। আথচ জাহাজ মালিকরা এ অল্প কিছু টাকা বাঁচাতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই অনেক বড় বিপদের সম্মুখিন হন।
জাহাজের সচেতন মাস্টারাও পাইলট নিয়ে নৌ যান চালানোর পক্ষে বাংলাদেশ নৌ যান ফেডারশনের কেন্দ্রীয় সদস্য মাস্টার হারুন আর রশিদ বলেন, চাঁদপুর আঞ্চল দিয়ে পণ্যবাহী নৌ যান চলাচলকারী প্রতিটি নৌযান শতভাগ মাস্টার নিয়ে চলাচল করার কথা। অথচ অনেক অসাধু জাহাজ মাস্টার কিংবা মালিক পাইলট ছাড়াই নৌ যান চালায়। এতে ঝুঁকি রয়েছে ও দুর্ঘটনায় ঘটছে।
উল্লেখ্য, দেশে ২৯টি নৌপথে পথে জাহাজে পণ্য পরিবহন করা হয়। পাইলট ছাড়া পণ্যবাহী জাহাজ চালানোর দায়ে গেলো ২ মাসে চাঁদপুর অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করা হয় ৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষক, চাঁদপুর এর যুগ্ম পরিচালক, স. ম. মাহাফুল উল আলম আরো জানান , নৌ রুটকে নিরাপদ রাখতে পাইলট বিহীন নৌযান চলচল বন্ধে আরো কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে।
তিনি জানান, সম্প্রতি মেঘনা নদীতে জাহাজে হত্যকান্ডের শিকার ইওয়া জাহাজটিও অবৈধভাবে চলছিলো। জাহাজটি কোনো পাইলট নেয় নি। প্রদান করেনি পাইলট ফ্রি এমভি বাকেরা নামের জাহাজের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রক্রিয়া চলছে।