নিজস্ব প্রতিবেদক॥
চাঁদপুর সদরের সুনামধন্য বিদ্যাপীঠ ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে বার্ষিক মিলাদ ও দোা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৭ নভেম্বর শনিবার দুপুরে কলেজের মহত্মা গান্ধী মিলনায়তনে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক এবং ফরাক্কাবাদ ডিত্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক জেলা ও দায়রা জজ শাহ নেওয়াজ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ । সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌসী আখতার।
এসময় বক্তরা বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বালা প্রতিষ্ঠায় আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। কিন্তু এদেশীয় স্বাধীরতার পরাজিত অপশক্তি সেটি কখনোই চায়নি। তাই তারা পচাত্তরের পনের আগস্ট আমাদের জাতির জনককে স্ব-পরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। কিন্তু তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারলেও পিতার আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। আর তাই আজকে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য সন্তান, জননেত্রী শেখ হাসিনার সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের হাল ধরেছেন।
সুজিত রায় নন্দী বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের সকল চক্রান্ততে পদদলিত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অপ্রতিরোধ্য গতীতে এগিয়ে যাচ্ছে। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের সকল সেক্টরের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থারও উত্তরােত্তর উন্নতি হচ্ছে। এখন এদেশের ধনী-গরীব সকল বাবা-মায়ের সন্তানরা স্কুলে যায়, সুন্দর পরিবেশে লেখাপড়া করে। সরকার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্য বই, উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। তোমাদের উজ্জল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনায় আছেন বলেই ফরক্কাবাদ ডিগ্রী কলেজকে আমরা চাঁদপুরের মধ্য অন্যতম মডেল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পেরেছি।
তিনি আরো বলেন, এবছর আমরা অত্যন্ত ঝাকজমকভাবে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো। এই কলেজের আয়োজনে ২দিন ব্যাপী আয়োজন করা হবে। এতে ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং ১০০ জন গুণি মানুষকে সংবর্ধনা জানানো হবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, তোমরা মানুষের মত মানুষ হবে। শুধু ভালাে রেজাল্ট করলেই হবে না, আগে মানুষের মতাে মানুষ হতে হবে। এই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে তােমরাই। তাই সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পরীক্ষা দেবে।
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, তোমারা যদি সুন্দর জীবন চাও তবে, তোমাদের অবশ্যই সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। আর সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হলে জীবনের সব কাজে তোমাদেরকে সৎ থাকবে হবে। একই সাথে বাবা-মাকে এবং শিক্ষকদেরকে সম্মান করতে হবে। মাদক, খারাপ কাজসহ সকল অপরাক থেকে দূরে থাকতে হবে।তোমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যদি ঠিক থাকে তাহলে তোমরা যে কোন কাজে সাফল্য খুঁজে পাবে এবং সঠিক লক্ষ্যে পৌছাতে পারবে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক জেলা ও দায়রা জজ শাহ নেওয়াজ তার বক্তব্যে বলেন, তোমরা যারা এই প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রি তারা অনেক সৌভাগ্যবান। কারণ তোমরা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে লেখাপড়া করতে পারছো। কিন্তু আমাদের সময়ে এতো সুযোগ সুবিধা ছিল না। আমরা অনেক প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে কষ্টে করে লেখাপড়া করেছি। তোমাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, সত্যিকারের মানুষ হয়ে বাবা-মা এবং দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।
কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মহিন উদ্দিন ও সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহামানের যৌথ পরিচালনায় অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন, অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ইসলামীয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী সৈয়দ আহমেদ পাটোয়ারী, নব-নির্বাচিত ৯নং বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল্লাহ পাটোয়ারি, চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রশীদ।
দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো সালাউদ্দিন। এবছর ফরাক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজ থেকে ৩৮৮ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মো. ছিদ্দিকুর রহমান ঢালী, শিক্ষানুরাগী সেলিম পাটোয়ারি, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী জি এমএ কাদের, শেখ শরিফ আহমেদ, যুবলীগ নেতা শফিকুর রহমান শেখ, জাহাঙ্গীর আলম নয়ন শাহজাহান দেওয়ান, তিমির নাহা, ছাত্রনেতা টুটুন মজুমদার, সুমন গাজি, কাজি নাসিম, সুমন মজুমদার প্রমুখ।
এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক চাঁদপুর শহরের সিটি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।