
কেএম নজরুল ইসলাম ॥
স্থানীয় একটি বাজার থেকে কেনা হয়েছে মৌসুমি ফল তরমুজ। ওই তরমুজট পরিবারের অনেকেই খেয়েছন কারো কিছু হয়নি। একই তরমুজ খেয়ে আহাদ শেখ নামে ২ বছর ৩ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের এছাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত শিশু আহাদ ওই গ্রামের মো. জসিম উদ্দিন শেখ ও মায়া বেগম দম্পত্তির ছেলে। তরমুজ খাওয়ার পর শিশুর মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
খবর পেয়ে বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে গেলে শিশুটির চাচা মো. টেলু ও চাচী জেসমিন বেগম বলেন, আমাদের পাশের এলাকা রূপসা বাজার থেকে তরমুজ কেনা হয়েছে। সেই তরমুজ আমরা পরিবারের ৪ জন খেয়েছি। রাতে আমার ভাতিজা আহাদ শেখ তরমুজটি খেয়েছে। খাওয়ার পর প্রায় আধাঘণ্টা সে খেলাধুলাও করেছে। হঠাৎ করে আহাদ অসুস্থ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
শিশুটির বাবা জসিম শেখ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের কেনা ওই তরমুজটি আমিও খেয়েছি। কী থেকে কি হয়ে গেল, আমাদের কারো কিছু হয়নি। তরমুজ খাওয়ার পর আমার ছেলেটা মারা গেল।’
শিশুটির দাদা আলী আহম্মদ শেখ বলেন, ‘আমার নাতির কোনো অসুখ ছিল না। তরমুজটি খাওয়ার পরই সে মারা গেছে।’
শিশুর মা মায়া বেগম বলেন, ‘আমি তরমুজ খাইনি। আমার ছেলে তরমুজ খেয়ে মারা গেল’- এই বলে সে সন্তানের শোকে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে।
স্থানীয়রা বলেন, ‘শিশুটির বাবা জসিম শেখ বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছে। কোনো স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে, আবার কয়েকজনে সাথে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়েছে। সর্বশেষ মায়া বেগমের সাথে ৪ বছর পূর্বে বিয়ে হলে আহাদের জন্ম হয়। তরমুজে কোনো বিষক্রিয়া ছাড়া সুস্থ একটি শিশুর মৃত্যু এভাবে হতে পারে না। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করা প্রয়োজন।’
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, ‘মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত ১০টা ৩০ মিনিটের সময় শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা পুলিশকে অবগত করি।’
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘শিশুটির পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’