নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের দেশ নদীমাতৃক। এখানকার নদীগুলো বিশাল আকারের। এতো বড় নদী পৃথিবীর কম দেশে দেখা যায়। এখানকার নদীগুলো ৮-৯ কিলোমিটার চওড়া এক এক জায়গায়। পদ্মা-মেঘনার গতিবেগের সঙ্গে পৃথিবীর আর কোনো নদীর তুলনা চলে না। তাই প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে আমাদের চলতে হয়।
শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে চাঁদপুর সার্কিট হাউসে জেলা সদরের বিষ্ণুপুর ও ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নে নদী ভাঙন এবং চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নদীর ভাঙা-গড়ার খেলা থাকবেই। সেটাকে আমরা পুরোপুরি বন্ধ করতে পারব না। বিশেষ করে পুরো চর অঞ্চল। যেমন পদ্মা-মেঘনার মাঝখানের চর পুরোটা বেঁধে দেওয়া সম্ভব নয়। যেখানে একেবারে বাজার, হাট ,মসজিদ, মানুষের আশ্রয়স্থল ভেঙে যাচ্ছে। সেখানে ভাঙন রোধে যথা সম্ভব আমরা চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, চাঁদপুরে আগামীতেও নদী ভাঙন প্রতিরোধে কাজ হবে। যেটুকু ভাঙছে সেটুকু যদি রক্ষা করতে হয়, তাহলে আগামী নির্বাচনে নৌকাতেই ভোট দিতে হবে। এই মুহূর্তে নদী ভাঙ্গন রোধে চারটি প্রকল্প এলাকাতে জরুরী ভিত্তিতে কাজ করা দরকার। সেটার জন্য যে বরাদ্দ লাগবে তা নিশ্চিত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা উদ্যোগ নিয়েছে।এ বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সাথে আমি কথা বলেছি। জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার জন্য যেন বরাদ্দ দেওয়া হয়। চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধের স্থায়ী প্রকল্পটি পাশ হবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুততার সঙ্গে এটিও পাস হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আজকের সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙনের যে চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরেছে তা দেখেছি। বিভিন্ন স্থানে ভাঙন প্রতিরোধে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সে জন্য ধন্যবাদ জানাই। আমি এসব বিষয়গুলো অবগত এবং মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমি আবারও চাঁদপুরের নদী ভাঙন প্রতিরোধের প্রকল্পগুলো নিয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।
দীপু মনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা বেশি থাকে এবং তা তিনি পূরণ করে আসছেন। শেখ হাসিনার কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি হওয়ার কারণ তিনি মানুষকে বার বার দেন। তিনি দিচ্ছেন এবং দেওয়ার সক্ষমতা রাখেন বলে মানুষ চায় তার কাছে। যে কোনো দিন দেয়নি, দিতে পারে না, দেওয়ার কোনো সক্ষমতা নেই, দেওয়ার কোনো ইচ্ছা ও দরদ নেই, তার কাছে কেউ চায় না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে তাদের কাছে কেউ চায়ও নাই। কারণ জানেই পাবে না এবং ইতিহাস তাই বলে। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল কিছুই হয়নি। কারণ আমরা এখন এসে তাদের এমপি-মন্ত্রীর বাড়ির সামনে রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট আমাদের করে দিতে হয়েছে। কাজেই মানুষের প্রত্যাশা আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে। আর চাঁদপুরে নদী ভাঙন প্রতিরোধে যতটুকু কাজ হয়েছে, তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপ্রধানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মোহম্মদ সাইফুল ইসলাম,চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল।
শহর রক্ষা বাঁধসহ চাঁদপুরের নদী ভাঙ্গন বিষয়ক সচিত্র তথ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জহুরুল ইসলাম।
এছাড়া নদী ভাঙ্গন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শামীম খান, ইব্রাহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মোঃ কাসেম গাজী, চাঁদপুর পৌরসভার কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান দর্জি ও সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া।
সদর ইউএনও সানজিদা শাহনাজ, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, পিপি এডভোকেট রঞ্জিত রায় চৌধুরী,জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন এসডু পাটোয়ারী,ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট জাহিদুল ইসলাম রোমান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যাপিকা মাসুদা নূর খান,চাঁদপুর জেলা পরিষদ সদস্য আয়েশা আক্তার লিলি,পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল,মন্ত্রীর স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিনিধি এডভোকেট সাইফুদ্দিন বাবু, সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারি,আবিদা সুলতানা, নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম চাঁদপুর দক্ষিণ অঞ্চল শাখার সাধারন সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন মন্টু গাজীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।