নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ ৩০ নভেম্বর। ইতিমধ্যে চাঁদপুরের পাঁচটি আসনে বেশ কয়েকজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ একাধিক অফিসে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। চাঁদপুর ৩ আসনে নৌকার প্রার্থী ডা.দীপু মনি হাইমচরে জমা দিয়েছেন। আজ চাঁদপুরেও জমা দেবেন। চাঁদপুর-২ আসনে নৌকার প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম ও তার পুত্র সাজেদুল হোসেন চৌধূরী দিপু। গতকাল মতলব উত্তর এবং চাঁদপুরে জমা দিয়েছেন। চাঁদপুর -৫ আসনে নৌকার প্রার্থী মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম গতকাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে শাহরাস্তি, হাজীগঞ্জ এবং চাঁদপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।বাকি প্রার্থীরা আজ মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এপর্যন্ত মনোনয়নপত্র তুলেছেন ৩৬ জন। এদের মধ্যে চাঁদপুর-১ আসনে ৯জন, চাঁদপুর-২ আসনে ৬জন, চাঁদপুর-৩ আসনে ৪জন , চাঁদপুর-৪ আসনে ১১জন এবং চাঁদপুর-৫ আসনে ৬জন। তাদের মধ্যে জমা দিয়েছে তিনজন।
জনা গেছে, চাঁদপুর-৩ ( সদর-হাইমচর) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত নৌকা প্রতিকে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি নির্বাচনী মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিকেল চারটার দিকে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার চাই থোয়াইহলা চৌধুরীর নিকট তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন এসডু পাটোয়ারী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজিম দেওয়ান, হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক নূর হোসেন পাটোয়ারী, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হুমায়ুন কবির প্রধানীয়া প্রমুখ।
চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর-মতলব দক্ষিণ) আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম।বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল হাসানের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।
উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে মনোনয়নপত্র জমা শেষে মায়া বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দেখানো পথই আমার কাছে রাজনীতি। কোনো পার্থিব লোভে রাজনীতি করি না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে রাজনীতির মাধ্যমে চাঁদপুর-২ ভাগ্যোন্নয়নে ঘটাতে চাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা আমার ওপর আস্থা রেখেই দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন, সেই আস্থা রক্ষায় জীবন দিতেও কুণ্ঠাবোধ করব না। বিপুল ভোটে নৌকাকে বিজয়ী করে জাতির পিতার আদর্শ সমুন্নত রাখতে কাজ করব।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এসি মিজান, আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার শাহজাহান সিকদার, ছেংগারচর পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ¦ রফিকুল আলম জজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী গাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম হাওলাদার।
এ আসনে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৫ প্রার্থী। এরা হলো- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, স্বতন্ত্র প্রার্থী এম. ইসফাক আহসান, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. মনির হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. এমরান হোসেন মিয়া, জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী ওবায়েদ মোল্লা। তারা চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও রির্টার্ণিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান এবং মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ।
চাঁদপুর -৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসানের কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দেন
এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি এবং তার আদর্শ আওয়ামী লীগের শক্তি। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের যে উন্নয়ন করেছেন।জনগণ সে উন্নয়নের সুবিধা পেয়েছে। এটা আওয়ামী লীগের শক্তি । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন । আমি সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। উন্নয়
নের বাহিরে আমরা কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছি না।নির্বাচনকে ঘিরে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তৃণমূলে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারবে না, দল তাদের সমর্থন দিবে না।
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহবুব উল আলম লিপনসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জমাকৃত মনোনয়ন বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৪ সালের ৭ই জানুয়ারী।