মাদক অভিযানে তথ্যের উৎস হবে সাধারণ মানুষ : পুলিশ সুপার

 

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুরের নবাগত পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেছেন, মাদক প্রতিরোধে চাঁদপুরে নতুন আঙ্গিকে পুলিশ কাজ করবে। প্রচলিত যে পদ্ধতি উৎস ভিত্তিক, সে পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে সাধারণ মানুষের তথ্য নিয়ে কাজ করতে চাই। কারণ উৎস্য কিংবা সোর্স যাই বলিনা কেন, ওই ব্যাক্তি কোন না কোনভাবে মাদক থেকে সুবিধা গ্রহণ করে। তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের গোপনীয়তা রক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা অধিকতর গুরুত্ব দিব। মাদকের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ অবস্থানে থেকে কাজ করবে।

রবিবার (৩০ জুলাই) বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপারের যোগদান উপলক্ষ্যে জেলার কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আপনাদের সহযোগিতা ও কাজ করেছেন বলে চাঁদপুর অনেকটা নিরাপদ। আমি আরো নিরাপদ করতে চাই। বাংলাদেশ পুলিশ মূলনীতি সামনে রেখেই কাজ করবো। সেগুলো আক্ষরিক অর্থে রাখতে চাই না, তা বাস্তবায়ন করবো। সামাজিক শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সামাজিক, অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক প্রগতিকে সামনে রেখে কাজ করবো। গুজব সৃষ্টিকারীদের দমনে কাজ করা হবে। প্রতিটি বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছ থেকে মতামত নেয়া হবে।

এসপি বলেন, কমিউনিটি পুলিশকে আরো গতিশীল করত হবে। কমিউনিটি পুলিশিং এর পাশাপাশি বিট পুলিশিং এর কাজ আরো গতিশীল করতে চাই। সমাজের সকলকে নিয়ে কাজ করতে চাই। সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে কাজ করবো। কমিউনিটি এপ্রোচ বলছি এটাকে। যারা ঝুঁকিতে আছে তাদেরকে নির্ধারণ করে আমরা কাজ করতে চাই। অর্থাৎ কোন ব্যাক্তি মাদকে আসক্ত। তাকে কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় এবং পুনর্বাসন করা যায়।

সাইফুল ইসলাম বলেন, যারা আইন ভঙ করবে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী কাজ করতে চাই। জেল খানা থেকে বেরিয়ে আসলে তারা যেন পুনরায় সেই বিপদগামী না হয় সেলক্ষ্যে কাজ করা হবে।

সাংবাদিকদের বক্তব্যে উঠে এসেছে থানার সমস্যাগুলো। একই সমস্যা সারা বাংলাদেশের রয়েছে। থানায় কর্ম পরিবেশ আরো ভালো করতে হবে। থানা দালালমুক্ত করতে হবে। সাধারণ মানুষ যেন হয়রানি না হয়, তাদের সাথে যেন অবশ্যই ভালো ব্যবহার করা হয়। পুলিশ সেবা কার্যকর সেবা দিতে চাই এবং দ্রুততম সেবা দিতে চাই। অভিযোগ প্রাপ্তির পর কত অল্পসময়ে তার কাজ করা হয় সেলক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে বলেন এসপি।

এসপি বলেন, চাঁদাবাজের বিরুদ্ধের কোন অভিযোগ হলেই আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিবো সে যেই হোক না কেন। কিশোর গ্যাং এই সময়ের একটি সামাজিক সমস্যা। এ লক্ষে আমাদের কিছু কর্ম পদ্ধতি রয়েছে। কিশোর গ্যাং নিয়ে আমাদের ব্যক্তিগত কিছু উদ্যোগ রয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ নিয়েও কাজ করতে চাই।
তিনি বলেন, পুলিশ ও সাংবাদিকদের লক্ষ ও উদ্দেশ্য প্রায় কাছাকাছি। মানুষের সেবা করা। সাংবাদিকদের তথ্য প্রাপ্তিতে কোন ধরণের সমস্যা হবে না। তথ্য সহজ করার জন্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই তা প্রকাশ করা হবে। কোন গণমাধ্যমকর্মীকে আমরা ছোট করতে চাই না। সকলেই সমাজের জন্য কাজ করেন। নামী বেনামী কিছু অনলাইন চালু হয়েছে, তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া ও সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। আমরা সবাই মিলে নিরাপদ চাঁদপুর গঠন করতে চাই।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ এর সঞ্চালনায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন, সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, বিএম হান্নান, গিয়াসউদ্দিন মিলন, ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী,শহীদ পাটওয়ারী, শরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, জি এম শাহীন, সোহেল রুশদী, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, ইউএনবির জেলা প্রতিনিধি অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ, প্রথম আলোর চাঁদপুর প্রতিনিধি আলম পলাশ ,সময় টিভির নিজস্ব প্রতিবেদক ফারুক আহমেদ, দৈনিক মানব কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি শাহাদাত হোসেন শান্ত, দৈনিক চাঁদপুর সংবাদের সম্পাদক আব্দুর রহমান, যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার কাদের পলাশ, দৈনিক প্রিয় চাঁদপুরের সম্পাদক বোরহান উদ্দিন ডালিম এখন টিভির জেলা প্রতিনিধি তালহা জোবায়ের, ফটো জানালিস্টের এসোশিয়েসনের সাধারণ সম্পাদক শাওন পাটওয়ারী,দৈনিক নতুন সময়ের জেলা প্রতিনিধি মিজান লিটন প্রমূখ।

সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়সহ জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে কর্মরত প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Loading

শেয়ার করুন: