মাসুদ রানা ॥
গৌরবের ৩১ বছর পূর্তিতে চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার সাধারণ সভাটি চরম উত্তেজনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতবছরের মেলার হিসেব নিকেশে অসংঙ্গতি এবং মূল আয়োজকদের বৈরী এবং বিরাগভাজন আচরণে ক্ষোভে ফুলে-ফেঁপে বক্তারা সভায় বক্তব্য দিয়েছেন। এবারের বিজয় মেলায় শতভাগ সচ্ছতার দাবি তুলেছেন বক্তারা। মেলা শেষে এক সপ্তাহের মধ্যে আয়-ব্যায়ের হিসাব উপস্থাপনের অনুরোধ করেছেন। দোকান বরাদ্দের সমূদয় টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন ।
গতকাল শনিবার বিকেলে জেলা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের ৩য় তলায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিসে মেলার সাথে সংশ্লিষ্টরা সাধারণ সভায় অংশ নেন।
সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মেলার উপদেষ্টামন্ডলীর সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, চাঁদপুরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে এই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। মেলাটি যেন সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিজয় মেলায় রাজনৈতিক দ্বন্দ তৈরি করেছেন কারা? মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার বিষয়ে আমরা সকলে একমত। কারো সাথে আমাদের দ্বিমত নেই। কমিটির সাথে সমন্বয় না করে এক ব্যক্তি সকল কাজ করতে গিয়ে কিছু দ্বিমত তৈরি করেছেন। কাজ করতে গেলে ভুল হবেই। তবে কাজকে এগিয়ে নিতে হবে। দোকানগুলো হবে মুক্তিযুদ্ধের সাথে সংশ্লিষ্ট, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য,শিশুদের ও নতুন প্রজন্মের জন্য।
সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন মেলার স্টেয়ারিং কমিটির সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. এ ওয়াদুদ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, চাঁদপুরে মুক্তদিবস উপযাপনের লক্ষ্যেই এই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার সৃষ্টি। তারপর ১৯৯২ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রথম মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন,আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি,যুদ্ধ করেছি, জীবন দিয়েছি। এখন দেশ হলো আপনাদের। মেলায় যারা দোকান দিবেন, তারা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা জমা দিবেন। কোন ব্যক্তির মাধ্যমে লেনদেন করবেন না। ৯০ এর অভুর্থানে যারা ভুমিকা রেখেছেন ও নতুন প্রজন্মকে মেলার বিভিন্ন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করবেন। হিসাব-নিকাশ, পারিবারিক সমস্যা, জেলা পরিষদ নির্বাচন সব কিছু নিয়ে সৃষ্টি হওয়া সমস্যার কারনে মেলার কার্যক্রম একটু দেরী হয়েছে। এই জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে এ বছর মেলা সঠিক সময়ে শুরু হবে। ইতোমধ্যে মাঠের কাজ শুরু হয়ে গেছে। মেলা কমিটি সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে।
মেলা কমিটির মহাসচিব হারুণ আল রশিদ এর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাড. বদিউজ্জামান কিরণ। সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাড. জহিরুল ইসলাম, অ্যাড.বিনয় ভূষন মজুমদার সাবেক মহাসচিব শহীদ পাটওয়ারী।
আরো বক্তব্য রাখেন, যুবলীগ নেতা জাফর ইকবাল মুন্না, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন,সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস, সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, রহিম বাদশা ,সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন শান্ত, ফেরদৌস মোর্শেদ জুয়েল, মাহফুজুর রহমান টুটুল,তৌহিদুল ইসলাম চপল, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বরকন্দাজ, শেখ মহিউদ্দিন রাসেল, মিজানুর রহমান লিটন, শাওন পাটওয়ারী, জাহাঙ্গীর হোসেন, আমির হোসেন বাপ্পি প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।