নিজস্ব প্রতিবেদক:
চাঁদপুরের জাগ্রত সাংস্কৃতিক সংগঠক ও শিল্পীদের উদ্যোগে চাঁদপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রধান অভিভাবক ও উন্নয়নের রূপকার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
২৯ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সম্মুখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তপন সরকারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য ও থিয়েটার ফোরামের সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার মহাসচিব হারুন আল রশিদ, বিশিষ্ট নাট্য নির্দেশক ও নাট্যকার লিটন ভূঁইয়া, বিশিষ্ট ছড়াকার, লেখক ও গবেষক ডা. পিযুষ কান্তি বড়ুয়া, বর্ণচোরা নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরী, সাংবাদিক ও নাট্য সংগঠক একে আজাদ, চাঁদপুর ড্রামার সাধারণ সম্পাদক মানিক পোদ্দার, সপ্তরূপা নৃত্য শিক্ষালয়ের অধ্যক্ষ অনিমা সেন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি মুক্তা পিযুষ ও অনুপুম নাট্যগোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক কার্তিক সরকারসহ শিল্পীবৃন্দ।
মানববন্ধনে প্রতিবাদী বক্তব্যে বক্তারা বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি চাঁদপুরের জন্যে কি না উন্নয়ন করেছে। আজকে আমরা সাংস্কৃতিক কর্মীরা এ মানববন্ধন করবো, তা কখনো চিন্তা করিনি। একজন ভালো মানুষের বিপক্ষে যারা থাকে, তাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে যে রাস্তায় নামে সবাই, এটাই তার প্রমান। আমরা মঞ্চের মানুষ, আজকে আমরা রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছি। তার কারন, চাঁদপুরের উন্নয়নকে ব্যাহত করার জন্যে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচার চালাচ্ছে। তাদেরকে প্রতিহত করার জন্যে এ মানববন্ধনে এসে দাঁড়িয়েছি। আমরা চাই উন্নয়ন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো আপোষ নেই। প্রয়োজনে আমরা রাজপথে নামবো। আমরা রাজনীতি করি না, আমরা সাংস্কৃতিক কর্মী। আমরা আজকে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি, তার কারণ আমাদের অভিভাবক ডা. দীপু মনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার করা হচ্ছে, তার জন্যে। আমাদের অভিভাবকের বিরুদ্ধে আর কোনো ষড়যন্ত্র নয়।
বক্তারা আরো বলেন, শিক্ষামন্ত্রী শুধু চাঁদপুরেরই মন্ত্রী নন, তিনি সারাদেশের মন্ত্রী। তিনি চাঁদপুরের প্রতিটি সেক্টরের উন্নয়নের রূপকার। তাঁকে নিয়ে আমরা সাংস্কৃতিক কর্মীরা গর্ববোধ করি। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো রকম ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার আমরা মেনে নিতে পারি না। যারা মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন, তাদেরকে আমরা সাংস্কৃতিক সংগঠক ও শিল্পীরা চিনি। তাদের চরিত্র সম্পর্কেও আমাদের জানা আছে। তাদের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা সম্পর্কে এ চাঁদপুরবাসী ভালো জানে। পঁনের বছর ১টি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে তিনি কী করেছেন? তাও সাংস্কৃতিক কর্মীরা ভালোভাবেই জানে।
আমাদের গর্বিত ‘চাঁদপুর টাউন হল’ আমাদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মার্কেট তৈরি করা হয়েছে। শত বছরের এ টাউন হল ছিলো আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির অন্যতম একটি পরিচিত নাম। ব্যক্তি বাণিজ্যিক লাভবানের জন্য চাঁদপুর টাউন হল ভেঙ্গে মার্কেট করা হয়েছে। আমরা সাংস্কৃতিক কর্মীরা এর জন্য অনেক প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু আমাদের কথা ওই সময় কর্ণপাত দেয়া হয়নি।
বক্তারা আরো বলেন, চাঁদপুরের উন্নয়নকে ব্যক্তি স্বার্থে বাঁধাগ্রস্ত করা হলে, চাঁদপুরবাসী তা কখনোই মেনে নেবে না। চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ স্থান নিয়ে নানান তামাশা করে সে উন্নয়ন প্রকল্পটিও আজকে আলোর মুখ দেখছে না। ঠুংকু অজুহাত দেখিয়ে সরকারের উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করা হচ্ছে শুধু ব্যক্তি স্বার্থের কারনে, আমরা তা বুঝি ও জানি। চাঁদপুরের উন্নয়নের জন্যে কার কী ভূমিকা আছে আমরা তা ভালো করেই জানি। তাই আমরা সবাই বলবো, আমাদের অভিভাবক শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি এবং চাঁদপুরের উন্নয়ন নিয়ে মিথ্যাচার করবেন না। সবাই সাবধান হয়ে যান। আজকে কারা এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন, আমরা সবাই তা জানি। যারা এ ষড়যন্ত্র করছেন, তাদের জনসম্মুখে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আমরা সাংস্কৃতিক শিল্পী ও সংগঠকরা ধিক্কার ও নিন্দা জানাই। আমরা সাংস্কৃতিক শিল্পী, আমরা কেউ কারো পক্ষে নই। আমরা শুধু জানি, আমাদের উন্নয়নের রূপকার ডা. দীপু মনি এমপি’র বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছে, তাদের অবশ্যই জনসম্মুখে এসে ক্ষমা ও জবাব দিতে হবে। দীপু মনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মানে, সরকারে বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন সাংস্কৃতিক কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো, ঠিক এখনও সাংস্কৃতিক শিল্পীরা সো””ার রয়েছে। প্রয়োজন হলে এখনো মাঠে-ঘাটে-রাস্তায় নেমে পড়বো কোনো রকম অন্যায় ও মিথ্যা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন : বর্ণমালা থিয়েটারের সভাপতি হাবিবুর রহমান পাটোয়ারী ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, অনুপম নাট্যগোষ্ঠী’র সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ ম-ল, মেঘনা থিয়েটারের সভাপতি তবিবুর রহমান রিংকু, অনন্যা নাট্যগোষ্ঠী’র সাধারণ সম্পাদক মৃণাল সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আলমগীর ও মানিক দাস, নাট্যশিল্পী বিরেন সাহা, রুনা আক্তার আশা, ফাতেমাতুজ জোহরা ও ফাতেমা জেরিন, বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী ইতু চক্রবর্তী, নৃত্যধারার অধ্যক্ষ সোমা দত্ত, কণ্ঠশিল্পী মেধা, কাবিশা, লিমা, অহনা, নাট্যশিল্পী দেবব্রত বিজয় সরকার, ইভা প্রমুখ।