শিশুদের ভেতরে জয় পরাজয়ের মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে: পুলিশ সুপার

স্টাফ রিপোর্টার ॥

চাঁদপুর শহরের শিশু শিক্ষার অনন্য বিদ্যাপীঠ ইকরা মডেল একাডেমীর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে উৎসব মুখর পরিবেশে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বর্ণাঢ্য এ আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে জাতীয়, ক্রীড়া ও বিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি মোঃ এরশাদ উদ্দিন।

ইকরা মডেল একাডেমীর প্রধান উপদেষ্টা রোটারিয়ান কাজী শাহাদাতের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আলম পলাশ, চাঁদপুর রেলওয়ে একাডেমির অধ্যক্ষ মাহমুদা খানম। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ইকরা মডেল একাডেমির পরিচালনা কমিটির সভাপতি লায়ন মোঃ গোলাম হোসেন টিটো।

বিকেলে সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রাকিব । বিদ্যলয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি লায়ন মোঃ গোলাম হোসেন টিটোর সভাপতিত্বে সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মোঃ ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক সবুজ ভদ্র, চাঁদপুর সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, মতলব উপজেলার সভাপতি ফারুক আহমেদ বাদল। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফৌজিয়া আকতার।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি মোঃ এরশাদ উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা এবং সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ করে দিতে হবে। তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। আমাদের সন্তানরা সুশিক্ষিত হলে তারা দেশের সুনাগরিক হয়ে উঠবে। এবং এরাই একসময় আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে।

তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর শহরের মধ্যে অন্যতম একটি আলোকিত বিদ্যাপীঠ ইকরা মডেল একাডেমী। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম এবং সহশিক্ষার অন্যান্য কার্যক্রম আমার ভালো লেগেছে। শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া নৈপুণ্যতা এবং তাদের শৃঙ্খলা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আজকের এই দিনটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বিশেষ দিন। এই দিনটির অপেক্ষায় শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা মুখিয়ে থাকে। খেলাধুলায় জয় পরাজয় থাকবেই। তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। আমি এই বিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের সাফল্য কামনা করছি।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রাকীব তার বক্তব্যে বলেন, জয় পরাজয় বড় কোন বিষয় নয়। আমি মনে করি যে কোন প্রতিযোগিতায় যারাই অংশ করে, তারা প্রত্যেকেই বিজয়ী। কারণ তারা প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব নিয়েই প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করে। ছোটবেলা থেকেই কোমলমতি এই শিশুদের ভেতরে জয় পরাজয়ের মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। তাদের সামনে আগামীর সুন্দর পথ সৃষ্টি করে দিতে হবে। আজকের এই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যে সকল শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে আমি তাদের প্রত্যেককে অভিবাদন জানাই।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, এই বিদ্যালয়টি আমার অফিস এবং বাংলোর খুব কাছে। তাই বিদ্যালয়ের কার্যক্রম প্রায় আমার চোখে পড়ে। এই বিদ্যালয়টি চাঁদপুরের মধ্যে সত্যিকার অর্থে একটি মডেল বিদ্যালয় হয়ে উঠবে, সেটি আমি প্রত্যাশা রাখি।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শাখার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান মাধ্যমিক শাখার ইনচার্জ ও সহকারী প্রধান শিক্ষক আসমা খানম। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মনোয়ারা বেগম, রাবেয়া সুলতানা, নাজমুন নাহার মিলি, রাহিমা আক্তার, রেজাউল করিম, হ্যাপি আক্তার, রুই আজমানিকা, মরিয়ম খানম, শাহিনা খানম, শিল্পী আক্তার, ইসমাইল হোসেন, নাসরিন আক্তার, বিলকিস আরা, মরিয়ম আক্তার, বৃষ্টি আক্তার, সুমিত কুমার দত্ত, শুভ্র রক্ষিত, শামিমা আক্তার, নাসিমা আক্তার, ফাতেমা আক্তার।

দিনব্যাপী আয়োজনে বিদ্যালয়ের কোমলমতি ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি ইভেন্টে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনমুগ্ধকর ডিসপ্লে এবং নৃত্য পরিবেশন আমন্ত্রিত অতিথিদের মুগ্ধ করে। সবচেয়ে মজার ইভেন্ট ছিল ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের যেমন খুশি তেমন সাজ এবং অভিভাবকদের আনন্দঘন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণ বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। এ সময় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Loading

শেয়ার করুন: