হাইমচরে প্রধান সড়কে ড্রেজারের পাইপ, দুর্ঘটনা বাড়ছে

 

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের হাইমচর অংশে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সড়কের ওপর একাধিক ড্রেজার পাইপ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছে বালু ব্যবসায়ীরা।

যার ফলে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে ছোট-বড় যানবাহন। ৫ আগস্টের আগে এই ব্যবসায়ীরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে জড়িত ছিল, তবে বর্তমানে যুবদলের স্থানীয় এক নেতাকে ড্রেজার ব্যবসায় যুক্ত করা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, আর্থিক সুবিধা নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও এই কাজে জড়িত রয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাইমচর উপজেলার নয়ানি সড়কের মোড়ে দীর্ঘ লাইনে বসানো ড্রেজার পাইপ। এখানে প্রায় সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশা, অটোবাইক এবং মালবাহী ট্রাক দুর্ঘটনার শিকার হয়।

স্থানীয় অটোবাইক চালক জাহাঙ্গীর বলেন, ড্রেজার পাইপের কারণে সড়ক উঁচু হয়ে গেছে, যার ফলে প্রায় সময় দুর্ঘটনার শিকার হই। কিছুদিন আগে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আমার গাড়ির সামনের অংশ ভেঙে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নয়ানী এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, এই ড্রেজার পাইপ একসময় এক জায়গায় বসানো হয়েছিল। বর্তমানে নয়ানি ও তার কিছু দক্ষিণে দুটি পাইপ সড়কের ওপর বসানো হয়েছে। এসব ড্রেজার ব্যবসার নেতৃত্ব দেন আবুল কালাম পাটওয়ারী। তিনি আওয়ামী লীগের লোক হওয়ায় বর্তমানে উপজেলা যুবদলের মান্নান নামে এক ব্যক্তিকে যুক্ত করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, সড়কের ওপর ছাড়াও বাংলা বাজার ও নয়ানী এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ সুরুঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ বসানো হয়েছে। কিছুদিন আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসব ড্রেজার মালিককে ডেকে কাগজে লিখিত রেখেছেন। সড়কের ক্ষতি হলে এর দায়িত্ব ড্রেজার ব্যবসায়ীরা নিবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন।
অভিযুক্ত ড্রেজার ব্যবসায়ী আবুল কালাম পাটওয়ারী বলেন, আমি কারো কাছ থেকে অনুমতি নেইনি। নিজেই ড্রেজার পাইপ বসিয়েছি। আমার কারো কাছ থেকে অনুমতি নেয়া লাগবে না। যেখান থেকে অনুমতি নেয়া প্রয়োজন, সেখানে নিয়েছি। একই সাথে অভিযুক্ত এই ব্যক্তি প্রতিবেদককে হুমকি ধমকি প্রদান করেন এবং তিনি সড়কে ড্রেজার পাইপ বসিয়ে এই ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

এই বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর পওর শাখা-৩ হাইমচরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, যারা সড়কের ওপর এবং সড়ক সুরুঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ বসিয়েছে, তাদের বিষয়ে গত বছরও থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ বছর আবারও তাদের তথ্য নেয়া হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ড্রেজার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, সড়কের ওপর ড্রেজার পাইপ বসানোর বিষয়ে আমি অবগত নই। জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, সড়কে সুরুঙ্গ করে পাইপ বসানো হলে সমস্যা নেই। তবে সড়কের ওপর পাইপ বসানো হয়েছে, বিষয়টি ওই সড়কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে।

 

 

Loading

শেয়ার করুন: