কচুয়ায় গৃহহীনদের স্বপ্ন পূরণ হলেও অনেকেই কর্মহীন

বিশেষ প্রতিবেদক:

কচুয়ার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি পরিবার যাদের কেউ বিধবা, কেউ তালাকপাপ্ত,কারো স্বামী অসুস্থ সন্তানদের নিয়ে অতি কষ্টে কাটছে তাদের জীবন । সামান্য আয় রোজগার করতে পারলেও থাকা -খাওয়ার জায়গার নিশ্চয়তা ছিলনা তাদের । এমন ৪৮টি পরিবার যাদের নিজস্ব সামান্য জায়গা আছে অথচ তাদের ঘর নেই সেইসব পরিবারের হয়েছে স্বপ্ন পূরণ। তারা পেয়েছে টেকসইভাবে তৈরি করা চমৎকার গৃহ ।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে আশ্রয়ণ -২ প্রকল্পের মাধ্যমে ্কচুয়া উপজেলা প্রশাসন এ গৃহগুলো নির্মাণ করে দেয় তাদের। তারা ঘর পেযে খুশি তবে অনেকে বেকার । চলতি সময়ে কাজ না থাকায় পরিবার নিয়ে কিছুটা কষ্টে আছে বলে অনেকে জানান। তবে তারা এখন স্বপ্ন দেখছে সামান্য কর্ম সংস্থানের । তাহলে আর তাদের কোনো দু:খ থাকবেনা বলে জানা যায়।

সরজমিনে উপজেলার নলুয়া, সাতবাড়িয়া , মনপুরা , কাদলা গ্রাম ঘুরে ও নিবাসীদের সাথে কথা বলে তাদের বেশ খুশি দেখা যায় । দু’শতাংশের ভূমিতে প্রতি পরিবারকে দেয়া ঘরগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে গাঢ় লাল কালারের উন্নত মানের টেকসই টিন । এসব বাড়িতে রয়েছে একটি রান্নাঘর শৌচাগার । রয়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও । নিজেদের মত করে ঘর সাজিয়ে নিয়েছেন তারা ।

সাতবাড়িয়া গ্রামের মিন্টু মিয়া জানান, এতদিন ঘর ছাড়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুব কষ্টে কাটিয়েছেন । বিনা খরচে ঘর পেয়ে তার কষ্টের অবসান হওয়ায় সে মহাখুশি। নলুয়া গ্রামের নিবাসী হুমায়নের স্ত্রী নার্গিসের স্বামী হকারি করেন । ছোট দু’ছেলে নিয়ে সংসার । এতদিন অন্যের ঘরে থাকতেন । এখন নিজেরে ঘর হয়েছে । খুব খুশি হয়ে মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও তাকে ধন্যবাদ জানান ।

ওই গ্রামের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুখতারা সূত্রধর আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন আমরা দু’বোন এক ভাই সহ আমাদের পরিবারটি ঘর না থাকায় খুবই কষ্টে কেটেছে এতেদিন। এখন খুব সুন্দর একটা ঘর পেয়ে সেখানে ছোট ভাই বোন নিয়ে পড়ালেখা করতে পারছি ।

একই এলাকার প্রয়াত দিলীপ সূত্রধরের স্ত্রী রিনা রাণী সূত্রধর বলেন ” ঘর না থাকায় এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে কেটেছে এতদিন ।

তিনি বলেন ‘ জীবনে অনেক কষ্ট করেছি । বঙ্গবন্ধুর কন্যা ঘর কইরা দিছে । আমার একটা ঠিকানা হইছে এখন। প্রধানমন্ত্রীর জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি ।’

এভাবে সাতবাড়িয়া গ্রামের মিন্টু মিয়া, পালাখালের আন্জুমান বেগম, বিতারা গ্রামের নাসির, কাদলা গ্রামের জিসান,মাছনিগাছা গ্রামের ছায়ারাণী সহ বিভিন্ন গ্রামের অন্যরাও চমৎকার একটি ঘর মালিক হতে পেরে বেশ আনন্দিত। ঘর পাওয়া নিবাসীদের আকুতি সামান্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলে তাদের খেয়ে না খেয়ে আর থাকতে হবেনা । দেশের নানা স্থানে ঘর নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলেও কচুয়ায় এ পর্যন্ত কোন প্রকার সমস্যা দেখা দেয়নি। এতে দায়িত্বরত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে দেখা যায় ।

উপজেল প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইঞ্জি:আশেকুর রহমান বলেন,‘মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয় হতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের -২ এর ঘরগুলো ডিজাইন মোতাবেক বাস্তবায়ন করা হয়েছে । উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের যারা ঘর পেয়েছে তারা এখন সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারছেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপায়ন দাস শুভ বলেন,‘ যথাযথভাবে যাছাই-বাছাই করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে সেমিপাকা ঘরগুলি নির্মাণ করা হয়েছে । উপজেলা টাস্কফোর্সের সমন্বয়ের মাধ্যমে এসব ঘরের অধিবাসীদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে । সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সঠিক তদারকির মাধ্যমে এসব গৃহ নির্মাণ বাস্তবায়ন করা হয়্। এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার অভিযোগ পাননি । ’

Loading

শেয়ার করুন: