ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন আতঙ্কে রঘুনাথপুরবাসী

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার রঘুনাথপুর এলাকায় আবারো ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। চলতি বর্ষায় রঘুনাথপুর বাজারের মসজিদ,হাইস্কুল,সরকারি প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন দক্ষিণস্থান দিয়ে ভাংগন এলাকার বালু বস্তার বাঁধসহ ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় আড়াইশ’ মিটার জায়গা। ভাঙন আতঙ্কে দিনপার করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।

ওই এলাকার আলাম গাজী বাড়ি, পাটোয়ারী বাড়ি খান বাড়ি পন্ডিত বাড়ির প্রায় শতাধিক বাড়ি ঘর এখন ভাঙ্গনের মুখে। ওই স্থান দিয়ে ডাকাতিয়া নদীর সৃষ্ট ঘূর্ণন স্রোতে পাড়ের মাটি ধস অব্যাহত রয়েছে। এই এলাকা রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড যে বালির বাধ দিয়েছিল সেই বস্তা গুলো দেবে যাচ্ছে । সেখানে নদীর গভীরতা বেশি এবং স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কারণে আবারো ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এই ভাঙ্গনের কারণে সেখানকার ইট খোলা ও ওয়াপদা পর্যন্ত এলাকাটিও হুমকির মুখে।

রঘুনাথপুর পাঁচ নং ওয়ার্ড আলাম গাজী বাড়ির বাসিন্দা সাহেব আলী ও শরীফ জানান,২০১৭ সাল থেকে অল্প অল্প করে ডাকাতিয়ার ভাঙনের কবলে বিলীন হচ্ছে রঘুনাথপুরে আমাদের বসতির এই এলাকা।

ইতোমধ্যে প্রায় ৬শ মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিছানো বস্তাগুলোও ভাংগনে টিকছে না। ভাংগতে ভাংগতে ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে নদী। এখানকার বাড়িঘর রাস্তা স্কুল মসজিদ মাদ্রাসা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ।

রঘুনাথপুরে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়ায় হুমকিতে রয়েছে অনেক বসতভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ওয়াপদার রাস্তা। ভাঙনরোধে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে বালিভর্তি ব্যাগ নদীতীরে ফেলছেন।

স্থানীয়রা জানায়, ডাকাতিয়া নদীর উত্তর পাড়ে বড় আকারো চর ডুবোচর রয়েছে । যার ফলে নদীর দক্ষিণ পাড়ে জোয়ার-ভাটার তীব্র স্রোতে ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ নদীর উত্তর পাড়ের চরগুলো ড্রেজিং করছে না।এ কারণে নদীর বিপরীতপাড়ে নদী ভাংছে।

চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার রঘুনাথপুর বাজার সংলগ্ন শেখ বাড়ী, খান বাড়ী, পন্ডিত বাড়ী, গাজী বাড়ি ছাড়াও সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্প (গুচ্ছগ্রাম) কাজী বাড়ী, মডেল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকা, বালিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকা ঢালীরঘাট, পাটওয়ারী বাড়ী,বাগাদি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ও শহরের ১১নং ওয়ার্ড গুনরাজদী এলাকা তীব্র ভাঙনের শিকার হচ্ছে। এসব এলাকার শত শত পরিবারের বসতঘর ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

ভাঙনরোধের ব্যবস্থা নিতে চাঁদপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা নির্বাহী প্রকৌশলীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভাঙ্গন কবলিত এই জনপদের মানুষ। স্থানীয়রা আশ্বাস নয়, চায় স্থায়ী প্রতিকার।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছি। চাঁদপুর শহরক্ষা বাধ প্রকল্পে এ এলাকাটিও রয়েছে। নদীর তীরে ভাঙন এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে এখানেও কাজ হবে।

Loading

শেয়ার করুন: