ফরিদগঞ্জে গৃহবধু মিশু হত্যার ঘটনায় ঘাতক সুজনসহ আটক – ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ফরিদগঞ্জে বখাটে প্রেমিকের হাতে জাহেদা আক্তার মিশু হত্যার ঘটনায় ঘাতক সুজন ও তার বন্ধু আমজাদ হোসেনকে আটক করেছে থানা পুলিশ । মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব প্রেসব্রিফিং করে সাংবাদিকদের ঘাতককে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বিকালে রূপসা উত্তর ইউনিয়নের নারকেল তলার একটি বাগান থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। এর আগে সোমবার রাতে নিহত জাহেদা আক্তার মিশুর মা ছালেহা বেগম বাদী হয়ে ঘাতক সুজন খানসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে ফরিদগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। অভিযুক্তরা হচ্ছেন, সুজন খান (২৫), তার ভাই সোয়েব খান (২৩), তাদের বন্ধু আমজাদ হোসেন (২৪) সাদ্দাম হোসেন (২২) ও জুয়েল হোসেন (২৫)। এরা সবাই ফরিদগঞ্জের চরমুঘুয়া গ্রামের বাসিন্দা। তবে তাদের পুলিশ সোমবার বিকালে সোয়েব খানকে আটকের পর রাতে ঘাতক সুজন খানের বন্ধু আমজাদ হোসেনকে আটক করে।

গত ২৯ জুলাই সোমবার ভোর ৫ টায় উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চরমুখুয়া গ্রামে সন্ত্রাসী প্রেমিক সুজন তাকে ধারালো দেশিয় অস্ত্র দিয়ে ছুরিকাঘাত করে খুন করেছে। ঘটনার পর থেকে ঘাতক সুজন খান পলাতক রয়েছে। তবে পুলিশ সুজনের ছোট ভাই শোয়েব খানকে ওই দিনই আটক করেছে।

নিহতের মা সালেহা বেগম জানান,বখাটে সুজন বিয়ের পূর্ব থেকে তার মেয়েকে উত্যেক্ত করত। রাস্তার উপর সুজনের একটি সাইকেলের গ্যারেজ আছে । ওই রাস্তা দিয়ে আসা যাওয়া সময় আমার মেয়েকে বিরক্ত করত সুজন। যার কারনে অল্প বয়সে প্রায় ৩ বছর আগে মাত্র ১৫ বছর বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিতে বাধ্য হই । বিয়ের পরে মেয়ের স্বামী সোহেল বেপারী কাতার চলে যায়। এ সুযোগে পুনরায় বখাটে সুজন আমার মেয়েকে বিরক্ত করতো । আজ ভোর ৫টার দিকে ঘরে ঢুকে বড় একটি ছোরা দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে ।আমাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। এর ফাকে ঘাতক সুজন পালিয়ে যায়। তাদের সহযোগিতায় মিশুকে ফরিদগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মিশুকে ঢাকায় রেফার করেন। পরে ঢাকা নেয়ার পথে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিশুর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ নিহতের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করে।

জাহেদা আক্তার মিশুর স্বজন ও থানা-পুলিশ জানায়, নিহত জাহেদা আক্তার মিশু চরমুখুয়া এলাকার সেকান্তর মেম্বারের বাড়ীর মৃত সেলিম বেপারীর(সাদ্দাম) মেয়ে। । বিয়ের পর স্বামী প্রবাসে থাকায় জাহেদা আক্তার মিশু বাবার বাড়িতে থাকতো। বাবার বাড়িতে থাকা অবস্থায় পাশের বাড়ির আবুল বাশারের ছেলে বখাটে সুজন খান (২১) মিশুকে তার বর্তমান স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিল।

নিহত মিশুর চাচা আহসান উল্যাহ বলেন, বখাটে সুজন প্রায় সময়ই নেশাগ্রস্ত থাকতো। শেষ পর্যন্ত সুজন আমার ভাতিজিকে মেরেই ফেলল। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই । তিনি জানান, মিশুর পিতা মৃত সেলিম বেপারীর(সাদ্দাম) ফরিদগঞ্জে পত্রিকা বিলিকারক ছিল।

Loading

শেয়ার করুন: