মেট্রোরেলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাড়া লাগবে না : মায়া

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেছেন, বিএনপি মানুষের সম্মান কেড়ে নেয় আর আল্লাহর ইচ্ছায় আওয়ামী লীগ মানুষের সম্মান ফিরিয়ে দেয়। আমরা যতক্ষণ মাঠে থাকব ততক্ষণ মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল আওয়ামী লীগের হাতেই ক্ষমতা থাকবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর জেলা পরিষদের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান, মিলনমেলা ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মেট্রোরেলে ভাড়া লাগবে না, তারা ফ্রি-তে চলাচল করবেন। আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের ৫২ বছরের মধ্যে ৩১ বছর স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে ক্ষমতা ছিল। এই ৩১ বছর আমরা মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিতে সাহস পাইনি। এসময় জিয়া এবং এরশাদ সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছেন, অবহেলা করেছেন। আর আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে আমরা ততবার বুক ফুলিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে পেরেছি।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন,ভোটের মাধ্যমে এ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এ সরকার ক্ষমতায় থাকলেই মানুষ শান্তিতে থাকবে। তাই আগামী নির্বাচনেও জয় বাংলা বলে নৌকায় সিল মারতে হবে। বিএনপি নাকি ১০ ডিসেম্বর ২৫ লাখ লোক নিয়ে ঢাকা শহর দখল করবে। ওইদিনই আওয়ামী লীগের ক্ষমতা শেষ। তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। আমরা বললাম আইনি খেলা দেখ। ওইদিন বিএনপি নাকে খত দিয়ে গরুর হাটের মাঠে গিয়ে সমাবেশ করেছে। আবার বলে ৩০ তারিখ মাঠে নামবে। ইনশাআল্লাহ আমরাও মাঠে থাকবো।

তিনি আরও বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে প্রথম আমরা ১১ জন মিলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গঠন করেছি। এই সংগঠন সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। এর মাধ্যমেই দেশে আজ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অস্তিত্ব মিলেছে। আমরা আমাদের দাবিদাওয়া তুলে ধরতে পারি। এখন একজন যুবক পড়াশোনা শেষ করে চাকরি হলে মাসে ২০-৩০ হাজার টাকা বেতন পায়। আর আমরা ঘরে বসে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ২০ হাজার টাকা সম্মানী পাই। এ সম্মান শেখ হাসিনা আমাদের দিয়েছেন।

চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান গণি পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নৌ কমান্ডো বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান কবির বীর প্রতীক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান প্রমুখ। পরে ৪ শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ও আর্থিক সহযোগিতা করা হয়।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গণি পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুদ্ধকালীন নৌ-কমান্ডার শাহজাহান কবির বীর প্রতীক, এফএফ কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রুস্তম আলী, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুর রব ভূঁইয়া ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জহিরুল ইসলাম।
জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন রাসেলের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধকালীন চাঁদপুর জেলার ৪০০ জন কমান্ডার ও খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও সম্মানী প্রদান করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছা এবং উত্তরীয় পড়িয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

চাঁদপুরের সকল পর্যায়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবারের সদস্য, জেলা পরিষদের সব সদস্য এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সবশেষে স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গণি পাটওয়ারী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা একটি গৌরবের বিষয়। আজকে আমি জেলা প্রশাসক হিসেবে এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, এটির কৃতিত্ব আপনাদের। আপনারা যদি সেদিন জীবনবাজি রেখে যুদ্ধে না যেতেন, তাহলে আজ আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশ দেখতে পেতাম না। আজ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিতে পেরে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি।

Loading

শেয়ার করুন: