স্টাফ রিপোর্টার ॥
আজ ৮ ডিসেম্বর বুধবার চাঁদপুর হানাদার মুক্ত দিবসে মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হতে যাচ্ছে। এ বছর বিজয় মেলার ভেন্যু হিসেবে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামকে বেছে নেয়া হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চাঁদপুর মাটি ও মানুষের নেত্রী, উন্নয়নের রূপকার ও স্থানীয় সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। উদ্বোধক থাকবেন মুক্তিযুদ্ধকালীন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারী।
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল।
এ বছর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার কার্যক্রম রাখা হয়েছে স্বাধীনতা’র সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু’র জন্মশতবার্ষিকী-কে ঘিরে। ১৯৯২ সালে প্রথম চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহুল স্থান হিসেবে খ্যাত চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা ৩০ বছরে পদার্পন করতে যাচ্ছে। এরপূর্বে ২৯ বছর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা মঞ্চে অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সেক্টর কমান্ডার, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক ও পেশাজীবী এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গণসহ বিভিন্ন সেক্টরের নেতৃবৃন্দ চাঁদপুরের বিজয় মেলা মঞ্চে ১৯৭১-এর স্মৃতিময় স্মৃতিচারণ করে গেছেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা এবং বুদ্ধিজীবী হিসেবে খ্যাত মন্ত্রীরা চাঁদপুর সফরে এসে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিদর্শনসহ স্মৃতিচারণ করে গেছেন। বিজয় মেলা শুধু কেনা-কাটার জন্যই নয়, এ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন ঘটনা জানান দিয়ে আসছে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের তথ্যচিত্র প্রদর্শনী হয়ে আসছে। এমনকি সে সময়কার চাঁদপুর মহকুমায় কারা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদেরও রয়েছে দালিলিক প্রমানসহ চিত্র।
মূলতঃ চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা চাঁদপুর জেলাবাসীর মিলন মেলা হিসেবে আখ্যায়িত হয়ে আসছে। শুধু চাঁদপুর নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা সমুহে’র মানুষজনও বিজয় মেলার কর্মকা- স্বচক্ষে দেখতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছুটে আসছে। ডিসেম্বর মাস মানেই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। এ বিষয়টি বেশির ভাগ শিশু-কিশোর এবং যুবকদের হৃদয়ে ধারণ করে রেখেছে। গত ক’দিনের নি¤œচাপের ফলে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার প্রস্তুতি কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। সে জন্যে বুকিং নেয়া অধিকাংশ দোকানীরা বৃষ্টির কারনে তাদের দোকানের পসরা সাজাতে পারেনি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আজ ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে দূর-দূরান্ত থেকে আসা দোকানীরা তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারে।
এ বছর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলাকে ঘিরে মাসব্যাপী চাঁদপুরের সকল সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক, সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানাবেন। মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার সকল কর্মকা-ে চাঁদপুর জেলাবাসীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বদিউজ্জামান কিরন ও মহাসচিব হারুন আল রশিদ।