কে এম নজরুল ইসলাম ॥
পলেস্তারা খসতে খসতে ব্রিজ আর ব্রিজ নেই। সেটা যেন এখন মরণফাঁদ। এমন পরিস্থিতি- যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে পুরো সেতু। এমনটিই শঙ্কা স্থানীয় জনগণের। কয়েক দশক পূর্বে নির্মিত সেতুটি দিয়ে বর্তমানে ভারী পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ার কারণে মারাত্মক দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মিত কাটাখালী ব্রিজ। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করা সেতুর উভয় পাড়ের ৫০ হাজার বাসিন্দা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ও পলেস্তারা খসে পড়েছে। সংস্কারের অভাবে ব্রিজের বিভিন্ন জায়গায় ফাটলের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। ব্রিজের দু’পাশের রেলিং ভেঙ্গে পড়েছে এবং নিচের অংশে পলেস্তারা খসে লোহার রড বেরিয়ে এসেছে। এমন অবস্থায় ভারী যানবাহন চলাচল কমে এলেও নদীর উভয় পাড়ের হাজার হাজার মানুষের চলাচলে বিঘ্নতা সৃষ্টি হয়েছে। যান চলাচলে বিঘ্ন হওয়ায় ২০ কিলোমিটার দূরের অন্য সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে গুনতে হচ্ছে বাড়তি জ্বালানি খরচ। দিতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। দৈনন্দিন কাজে প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ এই ব্রিজ। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।
অটোচালক মহসিন মিয়া এবং যাত্রী মানছুরা বেগম বলেন, ব্রিজের মাঝখানে বড় গর্ত এবং বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। গাড়ি চালাতে ভয় লাগে। তবুও জীবিকার তাগিদে পার হতে হয় ব্রিজ। ছোট ছোট গাড়ি উঠলেও ব্রিজটি বিপজ্জনকভাবে কাঁপে। আমরা চাই দ্রুত ব্রিজটি নতুন করে তৈরি করা হোক।
স্থানীয় ইসহাক বেপারী (৬৫), আঃ লতিফ (৫২), আলমগীর (২৯) সহ কয়েকজন জানান, ৩০/৩৫ বছরের পুরাতন এ ব্রিজটি দীর্ঘদিন যাবৎ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসীর এ ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। অথচ, যথাযথ কর্তৃপক্ষের সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই। এ ব্রিজের উপর দিয়ে ভারী কোনো যানবাহন চলাচলের ফলে যেকোনো সময় ব্রিজটি নদীর মধ্যে ভেঙ্গে পড়তে পারে। কয়েকবারই দেখেছি মাপজোক নিতে, কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। ক্ষোভ নিয়ে বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলে পরে মেরামত করতে আসবে!
উপজেলা প্রকোশলী মোহাম্মদ আবরার আহাম্মদ জানান, কাটাখালী ব্রিজটির দুর্দশার কথা আমাদের জানা আছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান আছে। খুব দ্রুত সময়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে নতুন নকশার ওপর ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।