হাজীগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত একজন নিহত

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছেন। তার নাম সাইমুন (২০)।

সে শনিবার রাত ৮টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত সুপারমেক্স হসপিটালে উন্নত চিকিৎসা নিচ্ছিলো। তার বাবা মো: ইউনুস জানান হাসপাতালে ৭০হাজার টাকা বিলের জন্য আদরের ছেলের মরদেহ আনতে পারছেন না। সাইমুন গ্রামের বাড়ী চাঁদপুর সদর উপজেলা মাহামায়া এলাকায়। তাদের পরিবারের সদস্যরা হাজীগঞ্জ পৌরসভা খাটরা বিলওয়াইতে বাসা ভায়া থাকতেন। নিহত সাইমুন কোরআনে হেফজো খানায় পড়ালেখা করতো। তার বাবা রাজমেন্ত্রীর কাজ করতেন।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টোরাগড় ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাজীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের টোরাগড় সর্দার বাড়ির বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে উভয় পক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। রাত ১০টার পর সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

একপর্যায়ে তা হাজীগঞ্জ বাজারে ছড়িয়ে পড়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বন্ধ হয়ে যায় চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের যানবাহন চলাচল। আতঙ্কে শত শত মানুষ বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ও হাসপাতালে ছুটাছুটি করেন এবং আটকা পড়েন। ঠিক কী কারণে সংঘর্ষ হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।তবে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় সরকার পরিবর্তনের পর সিএনজি , বাস ষ্ট্রেশনসহ বিভিন্ন লাভজনক ব্যবসা নিয়ে তাদের দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টোরাগড় ও মকিমাবদ সর্দার বাড়ির বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রথম দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। রাতে কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার হাজীগঞ্জ থানায় বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি। এতে করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবারো ২ গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জের ইউএনও তাপস শীল বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের মারামারি হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ১৭ জন উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি । হাজীগঞ্জের ইউএনও তাপস শীল মরদেহটি আনার ব্যবস্থা নিচ্ছে।

Loading

শেয়ার করুন: