কেএম নজরুল ইসলাম, ফরিদগঞ্জ :
ফরিদগঞ্জের গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কলেজের প্রধান ফটক ও কলেজের প্রসাশনিক ভবনে সকালে তালা দিয়েছিল কমিটির বিপক্ষের কিছু লোক ও শিক্ষার্থী। এই ঘটনার পর উত্তপ্ত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। দুপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গেইটে ঝুলানো তালা ভেঙ্গে কলেজে স্বাভাবিক পরিস্থিতি আনেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে উপজেলার ৫নং গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের প্রধান ফটকে তালা দেয় বিএনপি নেতা ডা. আবুল কালাম আজাদের অনুসারীরা- এমনটিই দাবি করেন কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি। কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ও মূল গেইটসহ প্রসাশনিক ভবনে তালা দেওয়ার ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভীত হয়ে দ্রুত কলেজ থেকে প্রস্থান করেন। কিছু শিক্ষার্থী কলেজ বন্ধের প্রতিবাদে করেন, আবার কিছু শিক্ষার্থী কলেজের কমিটিকে অবৈধ কমিটি সম্বোধন করে মিছিল ও প্রতিবাদ করেন। এতে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পুরো এলাকা।
খবর পেয়ে দুপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় কলেজের প্রধান ফটকের তালা ভেঙ্গে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনেন। এসময় সেনাবাহিনীর কমান্ডার, উপজেলা ভূমি অফিসার ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উপস্থিত থেকে কলেজের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য স্থানীয়দেরকে সতর্ক করে পুনরায় এই কাজ না করতে উৎসাহিত করেন।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটি গত ৬ নভেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত কমিটির অনুমোদন দেয়। কিন্তু সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এম এ হান্নানের অনুসারী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদকে না দেওয়ায় এলাকা উত্তপ্ত হতে শুরু করে। এরপরই সকালে ডা. আবুল কালাম আজাদের লোকজন এসে কলেজের প্রধান ফটকসহ প্রসাশনিক ভবনে তালা মেরে দেয়।
কলেজের শিক্ষার্থী মো. রাসেল হোসেন, রাইসুল ইসলাম, ওমর ফারুক নাহিদসহ আরও কয়েকজন বলেন, আমরা কলেজে কোনো রাজনীতি চাই না। আমরা পড়াশোনা করতে এসেছি পড়াশোনা করব। কলেজ বন্ধ থাকলে আমাদের ক্ষতি হবে। আমরা চাই কলেজের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসুক। কে সভাপতি হবে না হবে, তা আমাদের দেখার বিষয় না। কোনোপ্রকার রাজনীতি কলেজে হোক তা আমরা চাই না।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ বলেন, আমি সকালে শুনেছি আমাদের কলেজে কে বা কারা তালা মেরে দিয়েছে। আমি বিষয়টি সভাপতি কে জানিয়েছি। অসুস্থতার জন্য আজ কলেজে যেতে পারিনি।
এডহক কমিটির সভাপতি মাহবুব মোর্শেদ কচি বলেন, আমাকে সভাপতি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি কমিটি দিয়েছে। এমএ হান্নানের অনুসারী আবুল কালাম আজাদ এই কমিটি বাতিল করার জন্য সকল ধরনের নোংরামি করছে। সে রাজনৈতিক দলকে ব্যবহার করে স্থানীয় মানুষের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করছে। তার নেতৃত্বে আমার কলেজে বিএনপির কিছু লোক সকালে তালা মেরে দেয় এবং সকল শিক্ষার্থীদের ভয় দেখিয়ে মিছিল করতে বাধ্য করে। কলেজে যাতে তারা না আসে সেই বিষয়ে নিরুৎসাহিত করে। গত দুদিন আগেও আমাকে অপহরণ ও মারার চেষ্টা করা হয়েছিল।