একনেকে অনুমোদন পেলো চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।

তিনি বলেন, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পসহ প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এতে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১০ হাজার ২৬৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ২ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, চাঁদপুর শহর ও এর আশপাশের ৩০ দশমিক ১২ একর এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৭০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এজন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ, ১০টি আবাসিক ভবন তৈরি, ১১টি অনাবাসিক ভবন, লিফট, ১২ হাজার ৯২৭টি মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং তিনটি মোটর গাড়ি কেনা হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। চলতি বছর শুরু হয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।

একনেক সভায় পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা অংশ নেন।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে– নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে কালিয়া নামক স্থানে নবগঙ্গা নদীর উপর কালিয়া সেতু নির্মাণ; বিআরটিসির জন্য সিএনজি একতলা এসি বাস সংগ্রহ; উত্তরা এলাকায় পয়ঃশোধনাগার নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত); ধীরাশ্রম আইসিডি নির্মাণের লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণসহ পুবাইল-ধীরাশ্রম রেল লিংক নির্মাণ; গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে আগত দর্শনার্থীদের সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ; সোনাগাজী ৫০ মেগাওয়াট (সংশোধিত ৭৫ মেগাওয়াট) সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত); চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সিএমইউ) স্থাপন; চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন; বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ (১ম সংশোধিত)।

এছাড়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন প্রকল্প (প্রস্তাবিত ১ম সংশোধন); চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন; বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ; গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া উপজেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন; বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র প্রকল্প (এমডিএসপি) (৩য় সংশোধিত); কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলাধীন গড়াই নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প; গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় (ক্লাইমেট ভিকটিমস রিহ্যাবিলিটেশন প্রজেক্ট) (৪র্থ সংশোধিত) এবং জলবায়ু পরিবর্তন জনিত জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন সংক্রান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের সেক্টর প্রজেক্ট।

উল্লেখ্য,পদ্মা মেঘনা ও ডাকাতিয়া এই তিন নদী বেষ্টিত চাঁদপুরে ২০১০ সালের এক জনসভায় শহরটিতে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালে মেডিকেল কলেজটি সরকারি অনুমোদন পায়। ২০১৯ সাল থেকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে অস্থায়ীভাবে একাডেমিক কার্যক্রম চালাচ্ছে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ। অবশেষে প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছর পর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সি কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস পেতে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

Loading

শেয়ার করুন: