কোনো মান অভিমান দ্বিধা দ্বন্দ্ব নয় আসুন ঐক্যবদ্ধ হই:  শিক্ষামন্ত্রী

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর-৩ আসনের তিন তিনবারের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, বাঙালি জাতির দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ছিলো স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতা আনতে গিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। যিনি স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তাঁকে আমরা ধরে রাখতে পারিনি। মাত্র সাড়ে ৩ বছরের শুধু তাকেই নয় পরিবারকেসহ হারাতে হয়েছে। তিনি এই সাড়ে ৩ বছরের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার মুলভিত্তি রচনা করে দিয়ে গেছেন।

ডা. দীপু মনি এমপি গতকাল বিকেলে চাঁদপুর জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিএনপি ও জামাতের সারাদেশব্যাপী সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে হারানোর পর দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আাসে। এরপর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিতে গিয়ে আবারো ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়ার পর ২০০১-২০০৫ সাল পর্যন্ত আবারো সেই অপশক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে। বিএনপি দেশ ও জাতির সাথে বেঈমানী করে জামাত শিবিরকে নিয়ে সরকার গঠন করে দেশকে অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। শুধু তাই নয়, বিশ্বে ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষসহ এদেশের কৃষক ও শ্রমিকের নামের পূর্বে দুর্নীতির তকমা লাগিয়ে দিয়েছিলো। যা ছিলো আমাদের জন্য অনেক লজ্জ্বার। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ৭১, ৭৫, ২০০৪ সালে মানুষ হত্যা করেছে জামাত-বিএনপি জোট। যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি করে তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এরাই আবার আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়। এরা জানে না, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি সারাবিশ্বের জননন্দিত নেত্রী। এদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি চাঁদপুরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিশ্বের মধ্যে একমাত্র নেতা যিনি পুরো দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। বিশ্বের মধ্যে একমাত্র নেতা যিনি দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে অপশক্তিকে পরাজিত করে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়ক থেকে স্মার্ট দেশে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে দেশের গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সেবার নিশ্চিত করার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স করে দিয়েছেন। যার ফলে আজ আমাদের মাতৃ মৃত্যুর হার ও শিশু মৃত্যুর হার শূন্যের কোঠায় আসায় জাতিসংঘ কর্তৃক শেখ হাসিনাকে রোল মডেল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও একটি অপশক্তি মৃত তত্ত্বাবধায়ক নামের একটি ইস্যু নিয়ে রাজপথে আন্দোলনের অরাজকতার সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। সেই অপশক্তি নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নেত্রী যিনি এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি একজন বয়স্ক মানুষ, তাই বয়সের কারনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃপায় বাসায় বসে সেই সাজা খাটছেন। তাদের ২য় নেতা দুর্নীতিবাজসহ বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে বসবাস করছেন। এরা আবার দেশের নেতৃত্ব দিতে চায়।

তিনি আরো বলেন, আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিগত দিনে দেশের ভাষা, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নসহ দেশের ও জনগণের দূযোগময় মুহূর্তে পাশে দাঁড়িয়েছে নৌকা। তাই দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে পুনরায় নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করার জন্য আহ্বান জানান।

তিনি দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী নির্বাচন হচ্ছে আমাদের জন্য ও দলের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে আমাদের বিজয়ী হতে হবে। নিবার্চন একেকটি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। যারা দল করেন সকলের দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাই মনোনয়ন দিবে মনোনয়ন বোর্ড এবং দলীয় প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতএব নৌকা প্রতীক নিয়ে যিনি আসবেন যাকে নৌকা প্রতীক দেয়া হবে তার পক্ষে সকলকে কাজ করতে হবে। তাই সকলের নিকট আহ্বান রইলো কোনো মান অভিমান নয়, দ্বিধা, দ্বন্দ্ব নয় আসুন ঐক্যবদ্ধ হই। জনগণের ঘরে ঘরে সরকারের উন্নয়নের কথা পৌঁছে দেই আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করি।

চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুলের পরিচালনায় উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটোয়ারী, অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী আরশ্বাদ মিয়াজী, জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আলম মিল্টন, সদস্য ও চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়িকা অধ্যাপিকা মাসুদা নূর খান, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এমরান হোসেন সেলিম, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুল রহমান টুটুল, প্যানেল মেয়র ও জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী মাঝি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও প্যানেল মেয়র অ্যাডঃ হেলাল হোসাইন, সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক অ্যাডঃ হুমায়ুন কবির সুমন, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মোঃ আলমগীর ভূঁইয়া, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি শাহ আলম মল্লিক, জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সদর উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শাহ আলম মিজি, জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ও প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াস,পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শ্রিপ্রা দাস, সাধারণ সম্পাদিকা আয়শা আক্তার শ্যামলী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ানসহ আরো অনেকে।

Loading

শেয়ার করুন: