কোর্টের বিয়ের কোনো ভিত্তি নেই

হাসনা জাহান ॥

‘আর নয় বাল্য বিয়ে, এগিয়ে যাবো স্বপ্ন নিয়ে’ এমন প্রতিপাদ্যে চাঁদপুরে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭, বিধিমালা ২০১৮, জেন্ডার সমতা ও শিশু অধিকার’ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চাঁদপুরের সাংবাদিকদের নিয়ে এই ওরিয়েন্টেশন ২০ ফেব্রুয়ারি সোমবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

ইপসা ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের কারিগরি সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই ওরিয়েন্টেশনে কর্মশালায় চাঁদপুরের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ২৫ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বশির আহমেদ। আইন ও বিধিমালা বিষয়ে আলোচনা করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম মোসা। সঞ্চালনায় ছিলেন ইপসার বিভাগীয় ম্যানেজার ফারহানা ইদ্রিস। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন ইপসা চাঁদপুর জেলা সমন্বয়কারী গোলাম ছরওয়ার।

গ্লোবাল এফেয়ার্স অব কানাডা ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন কম্বেটিং আরলি ম্যারেজ ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় ছিলো দিনব্যাপী এই ওরিয়েন্টেশন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বশির আহমেদ বলেন, বাল্যবিবাহ রোধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। বাল্যবিবাহ সমাজ ও রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই বাল্যবিবাহ রোধে সকলকে যার যার অবস্থান থেকে সোচ্চার হতে হবে। লিখনীর মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করতে পারলে সমাজ থেকে বাল্যবিবাহ নিরোধ করা সম্ভব।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম মোসা বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ও বিধিমালা সাংবাদিকদের মাধ্যমে সমাজে এবং প্রত্যন্ত জায়গায় ছড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষক ও ছাত্রীদের কাছে বিষয়টি বেশি করে তুলে ধরতে হবে। সরকারের একার পক্ষে বাল্যবিবাহ রোধ সম্ভব নয়। মানুষকে বুঝতে হবে একটি মেয়ের বাল্যবিবাহ হলে তার মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা থাকে না। তিনি বলেন, বিবাহ নিবন্ধনের একমাত্র বৈধ কর্তৃপক্ষ হচ্ছেন ম্যারিজ রেজিস্ট্রার তথা কাজী। এর বাইরে অন্য কোনো উপায়ে বিবাহের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। তাই কোর্টের বিয়ে বলে যে একটা কথা প্রচলন আছে, এর কোনো ভিত্তি নেই। কোর্ট কখনো বিয়ে পড়ায় না বা রেজিস্ট্রি করেন না। বিবাহ সংক্রান্ত ‘ঘোষণাপত্র’ দিয়ে বিবাহ প্রমাণের কোনো সুযোগ নেই।

মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান শোভন,সাবেক সভাপতি রোটাঃ কাজী শাহাদাত, শরীফ চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সাংবাদিক আলম পলাশ, শাহাদাত হোসেন শান্ত, ফারুক আহম্মদ, শওকত আলী, মুনাওয়ার কাননসহ আরো অনেকে। প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির প্রমুখ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

Loading

শেয়ার করুন: