চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ পূনর্বাসন প্রকল্পের ৮শ কোটি টাকার কাজের উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ পূনর্বাসন প্রকল্প এর আওতায় নদী তীর প্রতিরক্ষা কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।  (সোমবার) ১৩ মে দুপুরে চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেডে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি এ কাজের উদ্বোধন করেন।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, দেশের সবকিছুর উন্নয়নের অবদান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার। যখন আমরা চাঁদপুর থেকে হাইমচর পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ নিয়ে আগে পরে কাজ করেছি, সেখান থেকেই আমাদের সফলতা শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সব সময় খুব আন্তরিকতার সাথে যে কোনো সমস্যা হলেই তারা আমাকে জানিয়েছেন। কাজে সহযোগিতা করেছেন। আমি যখন ২০০৮সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছি, তখন আমি ইউনিয়ন নির্বাচনের মতো ঘরে ঘরে গিয়েছি। যেখানেই গিয়েছি, সেখানেই নারী পুরুষের চোখে মুখে একটাই যেটা দেখেছি, সেটা হলো তাদের চোখেমুখে ছিল নদী ভাঙ্গার কষ্ট। তারা তখন আমার কাছে আকুতি জানিয়ে একটাই চেয়েছেন, সেটা হলো নদী ভাঙ্গন থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা। তাই আমি নির্বাচিত হয়েই প্রথমেই এই নদী রক্ষা বাঁধ নিয়ে কাজ শুরু করি। যখন আমরা সরকার গঠন করলাম, তখন আমাদের ঐকান্তিক চেষ্টায় এই নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ করা সম্ভব হয়েছিলো। একটা কথাই বলেছি আমরা, যেখানে যিনি দায়িত্বে রয়েছেন, যে যে এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ যারাই যে এলাকার দায়িত্বে ছিলেন, তাদেরকে বলেছি আমাকে নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজে কোনো প্রকার সমস্যা হলেই যেষ আমাকে জানান। তারাও সেইভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আবার অনেকে আছেন ঠিকাদার, আপনারাও যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে কাজ করে এবং সমস্যার কথা জানিয়ে।

তিনি বলেন, এ প্রকল্প এলাকা ৩৩৬০ মিটারে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ৮২৭ কোটি টাকা। প্রকল্পে প্রায় ২৩ লাখ বিভিন্ন সাইজের ব্লক, ১০ লাখের অধিক জিওব্যাগ ও ২৯ হাজার মিটার জিও পাইপ ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও এগুলো কার্যকর করা এবং এই প্রকল্পে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ জড়িত, তারা এই ভাঙ্গন থেকে উদ্ধার হবে। তাই আমরা আশাকরি এই কাজের মাধ্যমে এখানে যারা ব্যাবসায়ী আছেন, তারা কিন্তু নতুন করে আবার ব্যাবসার উন্নয়ন ঘটাতে পারবেন। এই বাঁধ যদি স্থায়ীভাবে নির্মান হয়, তখন আপনারা ব্যাবসাকে আরো বড় করে প্রসারিত করতে পারবেন।

তিনি বলেন, বড় স্টেশন যদি ভেঙ্গে যায়, তাহলে এর অবস্থা খুবই ভয়াবহ হবে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও এই বিষয়ে অনেক ভাবেন এবং তিনি যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন।

তিনি ঠিকাদারদের উদ্দেশ্য করে বলেন, সকল প্রকার মালামাল যেন ভালো এবং সর্বোচ্চ দেওয়া হয় এবং কোনো প্রকার গাফিলতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আপনারা এই কাজের বিষয়ে যথেষ্ট সজাগ থাকবেন। এই যে বড় স্টেশন অর্থাৎ মেঘনা, ডাকাতিয়া নদীর সংযোগস্থল দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা ঘুরতে আসে, তাদের যেন কোনো প্রকার সমস্যা না হয়, আমাদের চাঁদপুর কে যেন আমরা সব সময় মাদক মুক্ত এবং একটি আধুনিক শহর নির্মান করতে পারি সেই লক্ষে কাজ করে যাবো ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন- চাঁদপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসাশন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল ,চাঁদপুর বাপাউবো তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের, ,চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- চাঁদপুর জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বশির আহমেদ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন শান্ত, হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারী, চাঁদপুর জেলা পাউবোর প্রকৌশলী সালাউদ্দিন, প্রকৌশলী আতিকুল ইসলাম প্রমুখ ।

Loading

শেয়ার করুন: