জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমীতে একাধিক অনুষ্ঠান

 

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় চাঁদপুর আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমীর আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত শিক্ষানুরাগী ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালের বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ ও চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। এরপর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।

তিনি আরো বলেন, নবম শ্রেনীতে পড়াকালীন আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করি। ২৫ মার্চ কি হয়োছিলো তোমাদের জানতে হবে। আমি অনেক কিছুর স্বাক্ষী। পাকিস্তানিরা প্রথমে আক্রমন করেছিলো রাজারবাগ পুলিশ লাইনে। ২৫ মার্চ গনহত্যা হয়েছিলো শুধু আমাদেরকে পরাধিন রাখার জন্য। বাঙ্গালীদের কোন কিছুতে কোন অধিকার ছিলো না। এই আক্কাস আলী স্কুলে ৭১ সালে বহু ধর্ষন, গহত্যা হয়েছিলো। গলা কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। এ ধরনের সত্য ইতিহাস তোমাদের জানতে হবে।

তিনি বলেন, বাঙ্গালী জাতী তিল তিল করে এ স্বাধীনতা এনেছি। চাঁদপুরে প্রথম শহিদ হয়েছিলো কে তোমরা জানো? পাক আর্মিরা যখন চাঁদপুরে ঢুকে শংকর ও কালামকে গুলি করে। মহিলা কলেজের সামনে আশফাককে গুলি করে হত্যা করে। ২৫ মার্চের রাতে রাস্তার কুকুরগুলোও ক্ষমা করেনি।
আবু নাম পাটওয়ারী দুলাল আরো বলেন, বাঙ্গালী যেনো মাথা উচু করে দাঁড়াতে না পারে। তাই ২৫ মার্চ গনহত্যা ঘটানো হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলো। ৯টি বুলেট ও থ্রী নট রাইফেল দেওয়া হেয়ছিলো আমাকে। আমার কমান্ডার ছিলো মমিন খান আকাশ। সেদিন বঙ্গবন্ধুর ডাকে রক্ত টগবগে ছিলো। সেদিন ভাবি নি এ রাইফেল দিয়ে কি হবে।যুদ্ধ করবো,দেশ স্বাধীন করবো, দেশকে শত্রুমুক্ত করবো এ ছিলো দৃঢ় সংকল্প ছিলো।
তিনি আরো বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মুক্তির ইতিহাস-স্বাধীনতার ইতিহাস। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ শক্রমুক্ত হয়। কষ্টার্জিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংহত করার নতুন শপথে বলীয়ান হওয়ার দিন আজ। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় একের পর এক মাইলফলক অর্জন এবারের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকে মহিমান্বিত করেছে।
আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মো. গোফরান হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সহকারী শিক্ষক শাহাদাত হোসেনের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম মিয়াজী, শিক্ষক ফরিদ আহমেদ পাটওয়ারী, মরিয়ম বেগম, ফেরদৌসী সুলতানা, মো. আবুল কাসেম, তানিয়া জেসমিন, বদরুননেচ্ছা বিথী, শিউলি রানী আচার্য, সায়মা আহমেদ চৌধুরীসহ পরিচালনা পর্ষদ, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
আলোচনা সভা শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালসহ অতিথিরা। পুরস্কার বিতরণ শেষে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। সবশেষে বিদ্যালয় আঙ্গিনায় শতাধিক ঔষধি, ফলজ ও বনজ গান রোপন করেন অতিথিরা।

Loading

শেয়ার করুন: