বিচ্ছিন্ন ঘটনায় চাঁদপুরের ৫টি আসনের নির্বাচন সম্পন্ন

 

 

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুরের ৫টি সংসদীয় আসনে প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, গাড়ী ভাংচুর, ভোট বর্জন, অনিয়মের কারণে প্রিজাইডিং অফিসার পরিবর্তনসহ নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

রবিবার (৭ জানুয়ারি) চাঁদপুর-৫ আসন শাহরাস্তিতে হরতাল সমর্থকদের হামলায় ৩ সাংবাদিক আহত হয়েছেন। সকাল ১০ টায় উপজেলার সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শোরসাক গ্রামের উত্তরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহতরা হলেন, দৈনিক কালবেলার প্রতিনিধি স্বপন কর্মকার মিঠুন, এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি জামাল হোসেন ও দৈনিক আলোকিত চাঁদপুর পত্রিকার প্রতিনিধি মো. হাসানুজ্জামান।

বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রের বাহিরে নৌকা ও স্বতন্ত্র ঈগল প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের ৩৭নং মুন্সীরহাট উচ্চ বিদ্যালয় এবং ৩৮নং মুন্সীরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বিকাল ৩টায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসানের নির্দেশে পু:নরায় ভোটগ্রহণ করা হয়। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা বিদ্যালয়ের গ্লাস ভাংচুর করে। আতংক ছড়ি পড়লে ভোটাররা চলে যায়।
৩৭নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার জহিরুল আলম চৌধুরী বলেন, সকাল ১১টা পর্যন্ত ৫০০ ভোট গ্রহণ হয়। এই কেন্দ্রের মোট ভোট সংখ্যা ৩০২২। একই এলাকার ৩৮নম্বর কেন্দ্রের মোট ভোটার ২৬৪৯। ভোট গ্রহন হয়েছে ২৫৪টি।

এই কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে বিকেল পৌনে ৪টায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোফায়েল হোসেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে করে নিয়ে ব্যালট পেপারসহ কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে আনেন।
এদিকে চাঁদপুর-৩ (সদর-হাইমচর) আসনের হাইমচরে ১৩৯নম্বর কেন্দ্র উত্ত আলগী রশিদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট গ্রহনে অনিয়ম পাওয়ায় প্রিজাইডিং অফিসার মো. আমিনুল ইসলামকে বহিস্কার করে ১নম্বর সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। পরে ওই উপজেলার ৩২টি কেন্দ্রে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন সম্পন্ন হয়।

এছাড়া দুপুরে চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে ভোট গ্রহনে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেখ সাজ্জাদ রশিদ। ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই ভোট বর্জন করেন।

তিনি বক্তব্যে বলেন, তিনি সকাল থেকে যতগুলো ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি ছিল শূন্যের কোটায়। অথচ ব্যালট বাক্স অর্ধেকের বেশি ভরা। আমার এজেন্টদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বের করে দেয়া এবং উপজেলা সদরের এ আর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমার ও আমার গাড়ীর উপর বোমা হামলার ঘটনায় নির্বাচন প্রশ্ন বিদ্ধ হয়েছে। আমার কর্মী ও সমর্থকদেও মারধর, গাড়ী পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমি লিখিতভাবে আমার কেন্দ্রসহ ৩৩টি কেন্দ্র ঝুঁকপূর্ণ চিহ্নিত করে চিঠি দিলেও কর্তৃপক্ষ সেই অননুযায়ী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায়, আজকে ভোটের এই চিত্র।
সরকার ও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের যেই আশ্বাস দিয়েছিলেন, বাস্তবে তার ছিটেফোঁটাও নেই। আমার দলের প্রেসিডেন্ট জি এম কাদের ইতিমধ্যেই এই নির্বাচনকে ভোট ডাকাতির নির্বাচন বলেছেন। ফলে আমি এমন অনিয়ম, ভোটার শূন্য নির্বাচনে থাকতে পারি না। তাই আমি এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জন করলাম। এদেশের ১ কোটি জনগণ ও বিশ^বাসী এই নির্বাচন মেনে নিবে না।

Loading

শেয়ার করুন: