মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা

 

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেছেন মো.সহিদ উল্লাহ তপাদার নামে এক বীরমুক্তিযোদ্ধা বাবা। তার বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের মূলপাড়া গ্রামে। তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ।

শনিবার (২২ জুলাই ) বিকেলে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যেমে নিজের মেঝো ছেলে মো. আরিফ হোসেন (৩৮)কে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেন তিনি। একই সাথে ত্যাজ্য করা ছেলের দূরাবস্থার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষসহ প্রতিহিংসাকে দায়ী করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সহিদ উল্লা তপাদার বলেন, আমার চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে ছোট ছেলে গত ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে। তারপর থেকে তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে জীবন যাপন করছি। ফরিদগঞ্জ উপজেলার সরখাল কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত মেঝো ছেলে আরিফ হোসেন এলাকার কিছু বখাটে এবং আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সংস্পর্শে এসে মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ে। আরিফকে মাদক সেবন থেকে বিরত করার জন্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। আমারকে এলাকায় রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে মান সম্মান ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে কিছু কুচক্রীমহল এবং আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন আমার ছেলে আরিফ হোসেনকে তাদের দলে ভিড়িয়ে মাদকাসক্ত করাসহ আমার পেছনে লেলিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে আমি পরিবারের সকলের সাথে আলাপ আলোচনা করে আমাদের পরিবার থেকে তাকে আলাদা করে দেই। আমার স্থাবর -অস্থাবর সম্পদ হতে কোন হিস্যা না দিয়ে মৌখিকভাবে বাড়ির সকলের সামনে তাকে ত্যাজ্যপুত্র হিসেবে ঘোষনা করি।

তিনি আরও বলেন, আরিফ হোসেন গত ১৯ জুলাই ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে মাদকসহ আটক হওয়ার পর আমি বাধ্য হয়ে আজকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাকে ত্যাজ্য করলাম। আজ থেকে আরিফ হোসেনের সাথে আমার কোন সম্পর্ক রইলো না । আরিফের কোন বিষয় নিয়ে কেউ আমার পরিচয় না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।

সহিদ উল্লা তপাদার বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও প্রতিহিংসা পরায়ন লোকজন আমাকে এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে জড়িয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করছে। তারা পুলিশ সুপারের নিকট আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সারোয়ার হোসেন, সহকারি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সফর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ, আওয়ামী লীগনেতা নজরুল ইসলাম পাটওয়ারী, প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মামুনুর রশিদ পাঠান, সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম ফরহাদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য : গত ১৯ জুলাই বুধবার রাতে মো. আরিফ হোসেনকে তাদের বাড়ীর সামনে ৬পিস ইয়াবাসহ আটক করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মো. আবদুল মান্নান।

Loading

শেয়ার করুন: