স্টাফ রিপোর্টার:
রমজানে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখতে রোজার আগেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ভ্রাম্যমান আদালত কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এজন্য আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। রমজান শুরুর আগেই আমরা কার্যক্রম শুরু করব।’
বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় চাঁদপুরের কৃতী সন্তান বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সিটি এডিটর কবি মিজান মালিকের তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘মায়াতন্ত্র’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডিএমপি প্রধান বলেন, ‘রমজানে দ্রব্যমূল্য যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং কারও কারসাজির জন্য যাতে বাজারে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি না হয় সেজন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্তৃপক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের দেশে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর তৈরি করা হয়েছে, তারা সুন্দরভাবে কাজ করছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ সারাদেশে যোগাযোগ রেখেছি এবং সর্বাত্মকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এই রমজান মাসে কোনো কুচক্রী মহল যেনো বাজার অস্থিতিশীল না করতে পারে সেজন্য আমরা তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করব।’
এর আগে মায়াতন্ত্র বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এই কাব্যগ্রন্থের কবি মিজান মালিক একজন পেশাদার শিক্ষক বা পেশাদার সাংবাদিক হয়েই থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি কখনো সেখানে সীমাবদ্ধ থাকেননি। তিনি যেগুলো কাজ করেন সবগুলো জ্ঞানচর্চার বিষয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কবিতা গান ও ছোটগল্প লিখে আসছেন। নতুন যে বইটি প্রকাশ করেছেন তার নাম দিয়েছেন মায়াতন্ত্র। মায়া বলতে সহজে আমরা ভালোবাসা এবং ফিলিংসকে (অনুভূতি) বুঝি । আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। মায়া হারিয়ে যাওয়া মানে ভালোবাসা হারিয়ে যাওয়া। মায়া এবং ভালোবাসা দুটি শব্দ একটি শব্দের প্রতিশব্দ। এজন্য আমি মনে আজকের দিনটি তার সাথে একটি মিল রয়েছে’, বলেন ডিএমপি কমিশনার।
তিনি আরও বলেন, বইয়ের ভেতরে যে কবিতাগুলো আছে, আমি বুঝতে পেরেছি সেগুলো প্রেম প্রকৃতি নিয়ে লেখা। প্রেম-দ্রোহ, বিষন্নতা-অপ্রাপ্তি সৃজনশীলভাবে উঠে এসেছে তার কবিতায়। ৬৭টি কবিতা নিয়ে বইটি বেরিয়েছে, যার মূল্য ২৫০ টাকা। বইটির ছাপা, মলাট, বিন্যাস, অঙ্গসজ্জা সবই অতুলনীয়। আমি মনেকরি বইটি পাঠকপ্রিয়তা পাবে এবং বইটির বহুল প্রচার এবং প্রসার কামনা করি।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন বলেন, ‘মিজান মালিকের সঙ্গে আমি একই হাউজে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। তার মধ্যে আমি সে সময় যে প্রতিভা দেখেছিলাম, সেটিকে নিয়ে তিনি এগিয়ে চলছেন। তার পেশা এবং লেখালেখি দুটিকেই সে সমানভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, এ কারণে আমি মনে করি তিনি স্বার্থক।’
তিনি আরও বলেন, ‘মায়াতন্ত্র বইটিতে মিজান মালিক যে নতুন একটি ভাষা দিয়েছেন, আশা করি বইটা পড়লে সেটা আপনারা অনুভব করতে পারবেন। আশা করি, মিজান মালিক সাহিত্য এবং বইয়ের প্রতি ভালোবাসা সবসময় অব্যাহত রাখবেন।’
অনুষ্ঠানে মায়াতন্ত্র কাব্যগ্রন্থের কবি মিজান মালিক বলেন, ‘একটি উপন্যাসের ভেতরে যেমন অনেকগুলো চরিত্র থাকে, একজন লেখকের ভেতরে তেমন অনেকগুলো মনন থাকে। একজন লেখক কখনও তার লেখার সাথে আপোষ করতে পারেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের সমাজে মায়া খুবই দরকার। আমরা দিন দিন মায়াহীন নিষ্ঠুর মানুষে পরিনত হয়ে যাচ্ছি। আমার মনে হয়েছে মানুষে মানুষে বন্ধনে রাখবার জন্য মায়াটাও একটি প্রাতিষ্ঠানিক জায়গায় আসা দরকার। মায়া, ভালোবাসা একবার ছিটকে পড়লে মানুষ খুবই নিষ্ঠুর হয়ে যায়, সেই জায়গা থেকে মায়াতন্ত্র বইটি লেখা। আশা করছি, গল্প ছাড়া মলাট (মিজান মালিকের আরেকটি কাব্যগ্রন্থ) বইয়ের মত মায়াতন্ত্রও ভালো লাগবে।’
মায়াতন্ত্র বইয়ের প্রকাশক শ্রাবণ প্রকাশনীর কর্ণধার রাবিদ হাসান বলেন, ‘কবি হিসাবে মিজান মালিক অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত তা বোঝা যায় তার বইয়ের নাম শুনলেই। সাংবাদিক হিসেবেই নয়, কবি হিসাবেও মিজান মালিক প্রতিষ্ঠিত।’
অনুষ্ঠানে ফোডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মধুসূদন মণ্ডল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শুকুর আলী শুভ, ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, ক্র্যািবের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।