নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
লিবিয়ার বেনগাজী শহরের আরবান এলাকায় দালালের খপ্পরে আটকে থাকা চাঁদপুরের কচুয়ার সফিবাদ গ্রামের শ্রমিক ইব্রাহীম ফকিরের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় দিনগত রাত ৮টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১টা) তিনি লিবিয়ার মারা যান।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের নয় নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
ইব্রাহীম ওই গ্রামের নুরুল ইসলাম ফকিরের ছেলে। লিবিয়ায় নে
ওয়া দালালরা তাকে আটকে রেখে নির্যাতন ও মারধরের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি নিহতের পরিবারের।
ইব্রাহীমের মৃত্যুর বিষয়টি মোবাইলফোনে তার পরিবারকে নিশ্চিত করেন একই গ্রামের সহকর্মী আব্দুল হাকিম।
নিহত ইব্রাহিমের স্ত্রী রোজিনা বেগম জানান, সফিবাদ গ্রামের দালাল চক্রের হোতা খোরশেদ আলম আমার স্বামীকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে প্রায় এক বছর আগে লিবিয়ায় নিয়ে যায়। সেখানে কাজ না দিয়ে আমার স্বামীকে বদ্ধ কক্ষে আটকে রেখে টাকার জন্য নানাভাবে নির্যাতন করতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি মারা যান। আমি দালাল খোরশেদ আলমের শাস্তির দাাবি জানাচ্ছি এবং আমার স্বামীর মরদেহ দেশে আনতে সরকারের প্রতি দৃষ্টি কামনা করছি।
একই দালালের খপ্পরে থাকা দুই মাস আগে লিবিয়া থেকে দেশে আসা কবির হোসেন জানান, আমরা দুইজন এক বছর আগে লিবিয়া যাই। সেখানে ১৩ দিন থাকার পর পুলিশ আমাদের আটক করে দেশে পাঠিয়ে দেয়। পৃথকভাবে ইব্রাহীম চাচা গেছে আরেকজনসহ। দালালের কাছে আটকে থাকায় চাচা ইব্রাহীম অনেক কষ্ট পেয়েছেন। মর্মান্তিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন মোল্লা জানান, দালালের খপ্পরে এ এলাকার অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছে। তবে খোরশেদ আলমের কারণে অনেকে ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছে।
এদিকে শ্রমিক ইব্রাহীমের মরদেহ দেশে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই ইউপি সদস্য।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইকবাল হাসান জানান, তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না এবং কেউ জানায়নি। এখন তথ্য পেয়েছেন। বিষয়টি তিনি খোঁজ-খবর নেবেন।