শিলা হত্যার ঘটনায় আরও একজন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

চাঁদপুরে নিহত গোপালগঞ্জের নারী শিলা হত্যা মামলার ৩নং আসামী রফিক গাজীকে (৩০) এবার আটক করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ।শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিক্তিতে ওই আসামীকে চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাঠি ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রামের বাড়ি থেকে আটক করেন।সে এই হত্যা মামলার ৩নং আসামী। চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মহসীন আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ৭ সেপ্টেম্বর সকালে মৈশাদী গ্রামে ঝোঁপের ভিতর এক নারীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে আমরা ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করি এবং মরদেহের পাশে পড়ে থাকা ব্যাগে তার জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। নিহতের নাম শিলা খানম, পিতা মোঃ মানছুর খান, মাতা কমলা বেগম, সাং গোপালগঞ্জ সদর। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে স্বজনদের খবর দেয়া হয়। পরে পিবিআই, চাঁদপুর এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কাজ শুরু করে এবং মূল ঘাতক রাজীবসহ তার বন্ধু হ্নদয়কে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

চাঁদপুর মডেল থানার ওসি জানান, শিলা হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ৩জন আসামীর মধ্য পিবিআই ২ জনকে আর আমরা থানা পুলিশ অপর আসামিকে ধরেছি।

পিবিআই চাঁদপুর পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর শিলা খানম খুলনা যাওয়ার কথা বলে গোপালগঞ্জের বাসা থেকে বের হন। এরপর স্বজনরা তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান এবং সে নিঁখোজ ছিলো।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মৈশাদী গ্রামের এক বাড়ির বাগানের ঝোপ জঙ্গল থেকে শিলা খানম নামে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ।

এই ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর মামলাটি পিবিআই তালিকাভুক্ত হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয় পিবিআই উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমানকে।তদন্ত টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যাবহার করে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে উত্তর মৈশাদি গ্রামের মজুমদার বাড়ি আজিজ মজুমদারের ছেলে প্রধান আসামী মোঃ রাজীব মজুমদার এবং অপর আসামী পাশের ইউনিয়ন আশিকাটির হাঁপানিয়া গ্রামের খান বাড়ীর মৃত স্বপন খানের ছেলে মোঃ কামরুল হাসান হৃদয়কে সদর থানাধীন দাসদী গ্রামস্থ পাঠান বাড়ির মোঃ মাসুদ গাজী বাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়।

আসামীদের গ্রেফতারকালে ভিকটিম শীলা খানম (২৮) এর ব্যবহৃত এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনটি মূল আসামী মোঃ রাজিব মজুমদারের নিকট হতে এবং আসামীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও সীম কার্ডগুলো উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে জব্দ করা হয়।

পিবিআই পুলিশ সুপার জানান, প্রধান আসামি রাজীব মজুমদার গোপালগঞ্জের একটি জুয়েলারি দোকানে চাকরির সুবাদে পরিচয় হয় স্থানীয় গৃহবধূ শীলা খানমের সাথে। পরে তাদের মধ্যে পরকীয়া ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে শীলা বেগম তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এরপর তার পরকীয়া প্রেমিক রাজীব মজুমদার পরিকল্পনা মতো শীলাকে চাঁদপুরে নিয়ে আসে। তার উদ্দেশ্য ছিলো লঞ্চযোগে চাঁদপুর আসার পথেই শীলাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিবে। কিন্তু সে পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় মৈশাদী ইউনিয়নের একটি বাগান বাড়িতে এনে অপর ২ বন্ধুর সহযোগিতায় শীলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ জঙ্গলে ফেলে রাখে।

এ হত্যাকাণ্ডের ৩৬ ঘন্টার মধ্যে পিবিআই ও থানা পুলিশ পৃথকভাবে অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামি রাজিব মজুমদার ও তার সহযোগী বন্ধু মো. কামরুল হাসান হৃদয় এবং রফিক গাজীকে গ্রেফতার করা হয়।

Loading

শেয়ার করুন: