সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন কোন কাজ করা যাবে না: জেলা প্রশাসক

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা ১৮ জুন সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপ্রধানে অনুষ্ঠিত সভায় বিগত সভার কার্যবিবরণী পাঠ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শিক্ষা ও আইসিটি বশির আহমেদ।

জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান সভাপ্রধানের বক্তব্যে বলেন, আমরা রাজনৈতিক সরকারের অধীনে কাজ করি, তাই সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেকই আমাদের কাজ করতে হবে। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন কোন কাজ করা যাবে না। কাজের জবাবদিহিতা থাকতে হবে। কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এই সভাটি প্রতি মাসেই অনুষ্ঠিত হয়। দেখা যায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কোনো কোনো কর্মকর্তা বিভিন্ন অজুহাতে সভায় উপস্থিত থাকেন না। উপস্থিত না থাকার এই মানসিকতা পরিহার করে নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানান। তিনি নতুন অর্থ বছরে যে সকল প্রকল্প গ্রহণ করার প্রয়োজন রয়েছে সে সকল প্রকল্পের প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের নজরে আনার জন্যেও সকল দপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি খাদ্য উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা যেন ব্যাহত না হয় সেই লক্ষ্যে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা, অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনা, উৎপাদন বৃদ্ধি করা, খাদ্য গুদামে যাতে কোনোরূপ অনিয়ম পরিলক্ষিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাসহ সরকারি নির্দেশিকা মোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ের আগে, পরে যাতে কোনো ডিউ না কাটা এবং সরকারি খাদ্য গুদামের মাল ডেলিভারি না দেয়াসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি শহরের যানজট নিরসনে ঢাকাগামী চাঁদপুর নৌরুটের লঞ্চগুলো ইচলী ঘাট দেয়া যায় কিনা তা খতিয়ে দেখতে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি প্রকল্পের কাজের মান যাতে কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলে কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব নাছির উদ্দীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল, জেলা পরিষদ নির্বাহী মোঃ মিজানুর রহমান, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শাহাদাত হোসেন, আড়াশ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একে এম মাহবুবুর রহমান, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি, ফরিদগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহীগণ বক্তব্য রাখেন।

এছাড়াও উপজেলা পরিষদ, স্বাস্থ্য সেবা, গণপূর্ত বিভাগ, সড়ক বিভাগ মেঘনা ধনাগোদা পত্তর বিভাগ, শিক্ষা অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বিদ্যু উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি মন্ত্রণালয় অধিদপ্তর, জেলা মৎস বিভাগ, সমাজ সেবা অধিদপ্তর, জেলা মহিলা অধিদপ্তর, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, জনশক্তি, পরিসংখ্যান অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিএ অধিদপ্তরসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ তাদের দপ্তরের কর্যক্রম উপস্থাপন করেন।

আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নবৃদ্ধ হয় এ ধরনের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান এবং নদী থেকে বালু উত্তোলন, কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, যানজট নিরসন, জেলা খাদ্য গোডাউনের অনিয়ম সংক্রান্ত সমস্যা তুলে ধরেন এবং তা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

চাঁদপুর সদর হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের নােেম থাকা কেবিনগুলোতে প্রায়ই মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মীয়-স্বজনদের দিতে হয়। এই কারনে প্রয়োজনের সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কেবিন দেয়া যায় না, ফলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্থান হয় ফ্লোরে কিংবা সাধারণ বেডে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের এমন কথার প্রেক্ষিতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ব্যতিত মুক্তিযোদ্ধাদের নামে থাকা কেবিন যেন অন্য কাউকে না দেয়া হয় সেই নির্দেশনা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।

Loading

শেয়ার করুন: