সাহিত্যচর্চা চাঁদপুরে প্রাচীনকাল থেকে খুবই শক্তিশালী : শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি বলেছেন, সাহিত্যের বাহন ভাষা, সংস্কৃতির বাহনও ভাষা, সেই ভাষার উপর যদি আঘাত হানা যায় তাহলেই আমাদের সবচেয়ে বেশি দুর্বল করা যায়। সেজন্যই বারবার ভাষার ওপর আঘাত হানা হয়েছে। আর আমরাই সে জাতি, যে জাতি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। যারা মিথ্যাচারী, যারা অপপ্রচারকারী, যারা দেশবিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী, যারা অবৈধ এবং যাদের নেতৃত্বে এই দেশবিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী যত অপশক্তি আছে তাদের সবাইকে রুখে দিয়ে আমাদেরকে সুস্থ সুন্দর মানবিক সমাজ হিসেবে এগিয়ে যেতে হবে। আর এই এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদেরকে সাহিত্যচর্চা উদ্বুদ্ধ করবে, প্রাণিত করবে, আমাদেরকে সাহস যোগাবে। আর এই সাহিত্যচর্চা চাঁদপুরে বহু প্রাচীনকাল থেকে খুবই শক্তিশালী।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমিতে দুই দিনব্যাপী জেলা সাহিত্য মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সাহিত্য মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপু মনি বলেন, আমরা যা কিছু করি তা নতুন প্রজন্মের জন্যই করি। কারণ এই বাংলাদেশটি কোথায় যাবে, কেমন বাংলাদেশ হবে, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন, সেই বাংলাদেশ গড়ার কারিগর তো আমাদের নতুন প্রজন্ম। তাদের যত প্রতিবন্ধকতা আছে, জঞ্জাল আছে সেগুলাকে অপসারণ করার কাজটি আমরা যারা বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত আছি তাদের। কাজটি হলো এ সমস্ত জঞ্জাল, প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে নতুন একটা মসৃণ পথ তৈরি করে দেওয়া। তবে প্রত্যেক জন্মকে তার নিজের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী ৫২ বছর পর বাংলাদেশ যেখানে যাওয়ার কথা ছিল আমরা কিন্তু সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি। কারণ স্বাধীনতার পরবর্তী ২৮/২৯ বছর আমরা একটা নষ্ট সময় পার করেছি। যখন আমরা সামরিক আধা সামরিক স্বৈরশাসনে ছিলাম। আজকে সারাদেশে একটি রাজনৈতিক দল অপরাজনীতি করছে। তারা দেশ বার বার পিছিয়ে নিয়েছে। আমরা যখন স্বাবলম্বী হতে চেয়ে ছিলাম তারা স্বাবলম্বী হতে চায় না। তারা বলেছে স্বাবলম্বী হওয়া ভালো না কারণ বিদেশ থেকে সহায়তার পাওয়া যায় না। তারা চেয়েছে আমরা সারাজীবন ভিক্ষুকের জাতি থেকে যাই। বাঙালি স্বাধীনভাবে মাথা তুলে দাঁড়াবে সেটি তারা চায়নি। কারণ তারা একাত্তরে স্বাধীনতা চায়নি।

তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবের বলেন, এইচএসসিতে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী পাস করেছে, তার চেয়ে অনার্সে ভর্তির আসন সংখ্যা বেশি রয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা কেউ পেশাগত শিক্ষা, কেউ চিকিৎসা বিজ্ঞানে, কেউ প্রকৌশলে, কেউ আইনে, অনেকে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান উচ্চশিক্ষার জন্য। সারা দেশে ২ হাজার ২৫৭টি কলেজ আছে। সেখানেও উচ্চশিক্ষার জন্য যান। কেউ কেউ কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করেন। আমাদের সে আসন সংখ্যা আছে, সব মিলিয়ে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী পাস করেছে তার চেয়ে আসন সংখ্যা অনেক বেশি আছে।

জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে এবং সৈয়দ আয়াজ মাবুদের সঞ্চালনায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, বাংলা একাডেমীর সমন্বয়ে, অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বরেণ্য কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলা একাডেমির পরিচালক ডঃ আমিনুর রহমান সুলতান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ অসিত বরুন দাস, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আয়েশা রহমান লিলি, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী,প্যানেল মেয়র এডভোকেট হেলাল হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, প্রেসক্লাব সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, জেলা কালচারাল অফিসার দিতি সাহা, জেলা স্কাউট সম্পাদক অজয় ভৌমিক, জেলা শিল্পকলার একাডেমির এডহক কমিটির সদস্য শহীদ পাটোয়ারী, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অপন সরকার, জেলা সাহিত্য একাডেমীর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব শাহাদাত হোসেন শান্ত সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তা, এবং স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

Loading

শেয়ার করুন: