নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় সাবেক স্ত্রীকে হত্যার দায়ে হযরত আলী নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অপর ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৬ মে) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) এর বিচারক সাহেদুল করিম এই রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমান ভূঁইয়া।
হত্যার শিকার মিতু আক্তার (২১) হাজীগঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. হযরত আলী একই উপজেলার কীর্তনখোলা গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, মিতু আক্তারের সঙ্গে ২০১৩ সালে হযরত আলীর মোবাইলে পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক হয়। ওই বছরই তারা নিজ ইচ্ছায় হাজীগঞ্জে কাজী অফিসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর শ্বশুরবাড়ি গিয়ে নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন মিতু আক্তার। যার ফলে ২০১৬ সালের ২৫ জুন নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে মিতু ও হযরত আলীর তালাক হয়। এর মধ্যে হযরত আলী প্রবাসে চলে গেলেও মিতুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখেন। ২০১৭ সালের জুন মাসে আবার দেশে ফিরে আসেন হযরত আলী। পরে ২৩ জুলাই মিতুকে নিয়ে চাঁদপুর শহরে ঘুরতে যান হযরত আলী। ঘুরাঘুরি শেষে মিতুকে বাড়িতে পৌঁছে দেন তিনি। ওই দিন রাতেই হযরত আলী ও তার বন্ধুরা মিতুদের বাড়িতে খেতে আসবে বলে জানান। রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে হযরত আলী মিতুকে তার বন্ধুদের বাড়ির সামনে থেকে এগিয়ে নিতে বলেন। মিতু এগিয়ে গিয়ে আর ঘরে না ফেরায় তার মা রাবেয়া বেগম এলাকার আবদুর রহমানের ঘরের দক্ষিণে পুকুর পাড়ে মিতুর গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান।
এই ঘটনায় মিতুর মা রাবেয়া বেগম পরদিন ২৪ জুলাই হযরত আলীকে আসামি করে হাজীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামি হযরত আলীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, মামলাটি প্রায় ৭ বছর চলাকালীন আদালত ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আসামির অপরাধ স্বীকার এবং মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক আজ এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী সেলিম আকবর ও ইয়াসিন আরাফাত ইকরাম।