হাজীগঞ্জে স্বামী-স্ত্রী হত্যার ঘটনায় আটক ৮

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

হাজীগঞ্জে হাত-পা ও মুখ বাঁধা স্বামী ও স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ ।ওসি আব্দুর রশিদ বলেন, তদন্তের স্বার্থে আটক ব্যক্তিদের নাম এখন প্রকাশ করতে পাচ্ছি না। এ নিয়ে পরে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হবে।

এর আগে গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর বড়কুল গ্রামের পান্নার বাড়ি প্রকাশ কালা সিতার বাড়ি থেকে উত্তম চন্দ্র বর্মণ তুফান (৭০) ও কাজলী রানি দাস (৫৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হত্যার শিকার উত্তম চন্দ্র বর্মণ তুফানের বড় মেয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

পুলিশ বলছে, বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতের কোন এক সময়ে দুর্বৃত্তরা জানালার গ্রীল কেটে ঘরে প্রবেশ করে তাদেরকে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের শিকার উত্তম চন্দ্র বর্মণ তুফান স্থানীয় রায়চোঁ (নোয়াহাট) বাজারের মাছ বিক্রেতা। তিনি উত্তর বড়কুল গ্রামের দাস বাড়ির মৃত হরমন চন্দ্র বর্ধনের ছেলে।

এ বিষয়ে মেয়ে রিনা রানি বর্মণ জানান, গত আট-দশ বছর যাবৎ দুলাল সাহার কাজকর্ম করে আসছেন বাবা ও মা। দুলাল চন্দ্র নারায়নগঞ্জ বসবাস করায় গত ২ বছর ধরে দুলাল সাহার দালানঘর পাহারা দেন এবং ওই ঘরেই থাকেন বাবা-মা।

তিনি বলেন, শুনেছি পাশের বাড়ির সবিতা রানি সাহা পূজার জন্য ফুল নিতে আসেন। এ সময় তিনি দরজা খোলা দেখে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে খাটের উপর বাবা-মায়ের হাত-পা বাধা মরদেহ দেখতে পেয়ে ডাক-চিৎকার দেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা দুইবোন স্বামীর বাড়িতেই থাকি। ভাই না থাকায় বাবা মাছ বিক্রি এবং মা টুকটাক মানুষের কাজকর্ম করে কোনমতে চলেন (জীবিকা নির্বাহ করেন)। পাশাপাশি বাবা-মা দুলাল সাহার বাড়িঘর পাহারা দেন, বাতি জ্বালান, পূজা দেন।

কান্নাজড়িত কন্ঠে রিনা রানী বর্মণ বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের কোন শত্রু নেই। জানিনা, কে বা কারা বাবা-মাকে মেরে ফেলেছে, আমরা তার বিচার চাই।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আ. রশিদ জানান, মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উত্তম চন্দ্র বর্মণ (৭০) ও কাজলী রানি দাস (৫৫) খুনের ঘটনায় নিহতদের বড় মেয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিশপুর গ্রামের রিনা রানী অজ্ঞাতদের আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং ১০। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের দেয়া তথ্য যাছাই বাছাই করা হচ্ছে।

গতকাল চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একজন নারী ও পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করেছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমাদের সাথে পুলিশের বেশ কয়েকটি ইউনিট কাজ করছে। আমরা ক্রাইম সিন থেকে বেশ কিছু আলামত জব্দ করেছি। এই ঘটনার পিছনের কারণ হিসেবে কিছু তথ্য পেয়েছি। তথ্য যাচাই বাচাই সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য এখন থেকেই জেলা পুলিশ কাজ করছে।

Loading

শেয়ার করুন: