এবার ফরিদগঞ্জের গুলিবিদ্ধ আরেক শিক্ষার্থীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে শরীরে গুলি নিয়ে যন্ত্রনায় কাতর ছিলেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার কলেজ ছাত্র মহিন উদ্দিন। এখন সেই পুলিশের উদ্যোগে আবার উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজারবাগ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে তাকে। এর আগে একই উপজেলার আকবর হোসেন নামে আরেক গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পুলিশ।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত কলেজ ছাত্র মহিন উদ্দিনকে চাঁদপুর পুলিশ সুপারের নির্দেশে ঢাকা রাজারাবগ পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফ সরকার।

এর আগে মহিন উদ্দিনকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি টের পেয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারের নির্দেশে পুলিশ লাইনের একটি অ্যাম্বুলেন্স যোগে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) তাকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। সাথে ছিলেন মহিন উদ্দিনের বাবা মোক্তার হোসেন। তাকে গাড়ীতে তুলে দেন ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ।

মহিন উদ্দিন ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে। মোক্তার হোসেনের তিন সন্তানের মধ্যে বড় মহিন। তিনি কালির বাজার কলেজের বাণিজ্য বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।

স্বজনরা জানায়, ঢাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন কলেজছাত্র মহিন উদ্দিন। আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে ৪ আগস্ট ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষের সময় শরীরে ছররা গুলি লাগে তাঁর। সেই গুলি এখনো বের করা যায়নি। ঝুঁকি নিয়েই দিনাতিপাত কর ছিল সে।

মহিন উদ্দিন জানান, ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি ঢাকায় ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরুতেই যোগ দেন। গত ৪ আগস্ট কারওয়ান বাজার এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। বিকেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে তাঁর বুকে গুলিবিদ্ধ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে পান্থপথের একটি হাসপাতালে গেলে শরীরে কোনো গুলি নেই বলে হাসপাতাল প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে রক্ত ঝরতে দেখে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাড়িতে আসেন মহিন। ধীরে ধীরে যন্ত্রণা বাড়তে থাকলে ১১ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা সিটি স্ক্যান করেন।

এই বিষয়ে চিকিৎসকেরা জানান, শরীরের ভেতরে থাকা গুলি বের করতে গেলে ৯০ ভাগ মৃত্যুঝুঁকি আছে। এরপর মহিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে যায়। সেখানে ২০-২১ দিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন। এরপর আবার বাড়িতে অবস্থান কালিন সময়ে ব্যথার যন্ত্রণা থেকে মুক্ত থাকতে ঔষধের উপর নির্ভরশীল হতে হয় তাকে। সবশেষ ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ তাঁর চিকিৎসার উদ্যোগ গ্রহণ করায় নতুন করে আবার চিকিৎসা হয়ে সুস্থ্য হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মহিন।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফ সরকার বলেন, মইন উদ্দিনের অবস্থান জানার পর আমি চাঁদপুর পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব এর সাথে যোগাযোগ করি। তিনি নির্দেশনা দেয়ার পর আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে তাকে পাঠানো হয়।

Loading

শেয়ার করুন: