নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবের মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। দুর্যোগপূর্ণ সময়ে উপকূলীয় বাসিন্দাদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র। সাথে রয়েছে একটি মুজিব কেল্লা। প্রায় সোয়া লক্ষ মানুষ এসব আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবে। একই সঙ্গে নগদ অর্থ ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। তিনি বলেন, জেলার ৮ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ছাড়াও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুধীজন অংশ নেন।
সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় হামুন বুধবার দুপুরের আগে আঘাত হানতে পারে। চাঁদপুর ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় রয়েছে। এটি যদি আঘাত হানে তাহলে চাঁদপুরে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। সমূহ দুর্যোগ মোকাবেলায় চাঁদপুর জেলায় প্রস্তুতি প্রসঙ্গে সভায় জানানো হয়, জেলা ত্রাণ দপ্তরে আপদকালীন সময়ের জন্যে শুকনো খাবার ও টাকা মজুদ রয়েছে। আমরা সময়মতো দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে পারবো।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম, নৌ-পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসাইন, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ কুদ্দুস, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা প্রমুখ।
এদিকে সর্বসাধারণকে মাইকিং করে সতর্ক করে চাঁদপুরের পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া নদী উপকূলীয় এলাকায় সচেতনতামূলক মাইকিং নৌ -পুলিশ। একই সঙ্গে শহরের তিন নদীর মোহনা, বেদে পল্লী, মাছঘাট, জেলে পল্লী, লঞ্চঘাট, সদর উপজেলা হরিনা ফেরিঘাট, আলুর বাজার , হাইমচর, মতলব উত্তর -দক্ষিণ উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে অব্যাহত রেখেছে নৌ পুলিশ ।
এবিষয়ে নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ের সতর্কতা বিষয়ে আমাদের নৌ অঞ্চলে মাইকিং করে প্রচারণা হয়েছে। চাঁদপুর, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা জেলার যেসব থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি এবং করব। বিশেষ করে লঞ্চঘাট ও ছোট নৌযানগুলো নিরাপদে রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।