
মো. মহিউদ্দিন ॥
শাহরাস্তিতে সাম্প্রতিক আলোচিত হত্যা কান্ড আলমগীর হত্যা মামলার প্রধান আসামি সোনিয়া রিমান্ডে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
উপজেলার মনিপুরে প্রবাসির বাড়ির ছাদে ডেকে নিয়ে যুবককে গলা কেটে হত্যা মামলার আংশিক রহস্য কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উদঘাটন করতে সক্ষম হলেও মূল রহস্যের জঁট খুলছে না। তবে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য আসছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বাড়ির মালিক আবুল হোসেন মানিকের স্ত্রী খোদেজা বেগম ও মেয়ে সোনিয়াকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করার পর পুলিশ ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত সোনিয়ার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শাহরাস্তি থানা হেফাজতে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় আলমগীর হত্যা মামলার প্রধান আসামি সোনিয়াকে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অলি উল্লাহ জানান, সোনিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। আলমগীরের সাথে সোনিয়ার দীর্ঘদিনের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। সোনিয়াকে উত্ত্যক্ত করার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে সে তার মামা শ্বশুর তাজুল ইসলাম তপনের সহযোগিতায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে সোনিয়া বিজ্ঞ আদালতে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। সোনিয়ার মামা শ্বশুর তপনকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে আলমগীর হত্যার পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ যে দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে তা তপনের বলে পুলিশ আগেই নিশ্চিত হয়। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। উক্ত ঘটনায় জাল টাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সোনিয়ার একাধিক পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিলো যা এলাকাবাসীও জানতো।
মামা শ্বশুর তাজুল ইসলাম তপনের সাথে সোনিয়ার পরকীয়া প্রেমের কথা অনেকেই গণমাধ্যমকে বলেছেন। আলমগীর হত্যার পর এলাকাবাসী মাস্টার মাইন্ড হিসেবে তপনের শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে নিজের পরকীয়া প্রেমের অংশীদাররিত্ব কাউকে না দিতেই আলমগীরকে সরিয়ে দিয়েছে তপন। আর এ ক্ষেত্রে সোনিয়ার সহযোগিতায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এদের সহযোগী হিসেবে আরও কেউ থাকতে পারে।
জানা যায়, তাজুল ইসলাম তপন চিতোষী পূর্ব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপনের ছোট ভাই। এলাকায় একজন সন্ত্রাসী ও বখাটে ছেলে হিসেবে পরিচিত।
এদিকে হত্যাকাণ্ডে সোনিয়ার মা খোদেজা বেগমের সম্পৃক্ততা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ না পাওয়া গেলেও প্রমাণ লোপাট ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগে তিনি ফেঁসে যেতে পারেন।
শাহরাস্তি মডেল থানার ওসি আবুল বাসার জানান, আলমগীর হত্যা মামলার প্রধান আসামী সোনিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আরও যারা জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।