গণঅভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী জনগণের কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে, কাজেই সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশকে কখনোই বিতর্কিত করা যাবে না : নুরুল হক নুরু

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

চাঁদপরে দলীয় আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মো, নুরুল হক নুরু বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে আমরা রাজপথে নেমে ছিলাম। ফলে গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। এ আন্দোলনে আলেম-ওলামা এবং প্রশাসনের একটা বড় অংশ শেষদিকে আমাদের কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে। সেনাবাহিনীও এক পর্যায়ে জনগণের কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে। কাজেই সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশকে কখনোই বিতর্কিত করা যাবে না।

তিনি বলেন,এগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। যারাই আমরা সরকার গঠন করি, সে সময় রাষ্ট্র চালাতে এদের সহযোগিতা প্রয়োজন হবে। যারা এসব প্রতিষ্ঠান কলঙ্কিত করেছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হবে। তাদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য যার যার জাগা থেকে আমরা আওয়াজ তুলবো। তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মান রক্ষা করাও কিন্তু আমাদের দায়িত্ব। তিনি আজ চাঁদপুরে গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন।

ভিপি নূর আরো বলেন,বাংলাদেশে প্রায় ৫০টা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে। একটা আওয়ামী লীগ না থাকলে কিছু হবে না। আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবে একটা ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল। স্বৈরাচারী রাজনৈতিক দল। গত ১৬ বছরের বর্বরতা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। কাজেই সে অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এই দেশে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনীতি করবে এটা অংশীজন হিসেবে আমরা কেউই মেনে নেবো না।

চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সভাটি  বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান,চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সলিমুল্লাহ সেলিম, অনুষ্ঠানের সভা প্রধান ছিলেন চাঁদপুর জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি কাজী রাসেল। পরিচালনা করেন সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন।

সভায় ভিপি নূর আরো বলেন, এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ যারা আছেন, তাদেরকে আমরা অনুরোধ করবো, আপনাদের জায়গা থেকে শক্তভাবে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার আওয়াজ তুলতে হবে। দেশে গত ১৬ বছর গণতন্ত্র , ভোটাধিকার না থাকার ফলে ফ্যাসিবাদ জনগণের ওপর চেপে বসেছিল। সেই গণতন্ত্র ভোটাধিকার না থাকলে আবারও নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ আমাদের ওপর চেপে বসতে পারে।

আমরা মনে করি, আমরা যে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলছি বাংলাদেশে একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান কিংবা গণতন্ত্রের পথে যাত্রা, এটা রাষ্ট্র সংস্কারেরই একটা অংশ। কাজেই যত দ্রুত সম্ভব একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই সংকটের উত্তরণ ঘটাতে হবে।

ভিপি নূর আরও বলেন, রাজনীতি একটি জনসেবা। এটা পয়সা কামানোর হাতিয়ার না, এটা কোনো ব্যবসা না ৷ যদি ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে পারেন, তবেই রাজনীতি করবেন। অন্যথায় না। অন্তত আগামী ১০ বছর এই দেশকে স্থিতিশীল রাখার জন্য, দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আমাদেরকে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে।

ছাত্র নেতৃবৃন্দের গত কয়েক দিনের কিছু বক্তব্যের বিপরিতে তিনি বলেন, এদের এলোমেলো বক্তব্য পুরো জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। একজন কথা বলছে, আরেকজন বলছে না। এভাবে হয় না। আরেকজন বলছে তাদের দুই জনের একজন মিথ্যা কথা বলেছেন। দায়িত্বশীল ছাত্র নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করবো, আপনারা দায়িত্বশীল কথা বলুন। এমন কোনো কথা বলবেন না, যেটা একটা সংকটকে উস্কে দেবে ষড়যন্ত্রকারীদের ফায়দা লুটার রাস্তা করে দিবে।

গণআন্দোলনে ছাত্র এবং তরুণদের ভূমিকা ছিল। তারা নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজত, খেলাফতের লোকজনও নানাভাবে নিগৃহীত হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, লা ত হয়েছে। তারপরও হাসিনার সাথে আপোষ করে নাই। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের এই আপোষহীন লড়াই এ প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে, এটি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না।

Loading

শেয়ার করুন: