চাঁদপুরকে মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুর জেলাকে মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে ২৬ অক্টোবর কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন সংক্রান্ত বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন লে: কর্ণেল মো: মোয়াজ্জেম হোসেন অধিনায়ক, ২১ বার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) রাশেদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একরামুল ছিদ্দিক, নৌ- পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহম্মেদ, এনএসআই যুগ্ম পরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ -পরিচালক মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান, জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অফিসার ইনচার্জ, কোস্টগার্ড, রেলওয়ে পুলিশ, ডিজিএফআইসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অংশীজন।

সভায় বক্তরা বলেন, বর্তমানে যুব সমাজ অসংখ্য সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত। এসব সংকট ও সমস্যার মধ্য হতে অন্যতম সংকট ও সমস্য হলো মাদক সেবন ও নেশা করা। হতাশা আর ব্যর্থতায় জর্জরিত যুবক শ্রেণি মাদকের নেশায় বুঁদ হয়ে শান্তি খুঁজেছে নেশার ঘোরে। ফলে যুব সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ মাদকের থাবা বসেছে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা আজ লেখাপড়া ছেড়ে মাদকের কুপ্রভাবে আসক্ত হয়ে কঙ্কালসার হয়ে পড়েছে। যুবসমাজের মধ্যে বৃদ্ধি পাচ্ছে সন্ত্রাস, চুরি, ডাকাতি। আগামী দিনের সোনালী ফসল আসবে যাদের ছোঁয়ায়, যারা গড়বে আগামীর পৃথিবী, তারাই আজ তলিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার অতলে।

মাদকের ভয়াল থাবা থেকে চাঁদপুরকে মুক্ত করে সুস্থ জীবন, সুস্থ দেশ গড়তে জেলা প্রশাসক বলেন, মাদক সেবনকারী চিহ্নিত ও শাস্তি প্রদান করার পাশাপশি মাদক বিক্রেতাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।

এছাড়াও তিনি মাদক চোরাচালানকারীদের চ্যানেল হিসেবে ব্যবহৃত রেলপথ ও নৌপথে চেকপোস্ট জোরদারকরণ, গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারী বৃদ্ধিকরণ, মাদক সেবনকারী ও বিক্রেতা চিহ্নিতকরণে সোর্স শক্তিশালীকরণ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকরণ, মসজিদ/মন্দিরের ইমাম/পুরোহিত কর্তৃক মুসল্লি ভক্তদের মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ, সকল শ্রেণি-পেশা, সচেতন মহল ও সাধারণ জনগনকে মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান দৃঢ়করণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

এসময় তিনি মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক সেমিনার আয়োজন করার জন্য সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

লে: কর্ণেল মো: মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মানকমুক্ত চাঁদপুর গড়তে হলে সংশ্লিষ্ট সকল বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। মাদকের করাল গ্রাস থেকে চাঁদপুরকে রক্ষা করতে অন্যান্য সকল বাহিনীর মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও বদ্ধ পরিকর।

পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে চাঁদপুর পুলিশ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করছে। সবাই যদি মনে করে পুলিশ এককভাবে এ সমস্যার সমাধান করে দিবে তা কিন্তু সঠিক হবে না। এখানে যেমন পরিবারের কর্তব্য রয়েছে, রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এবং সমাজপতিদরেও। সমাজের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোরও কর্তব্য ও দায়িত্ব রয়েছে মাদক নির্মূলে ভূমিকা রাখার।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে নোডাল এজেন্সি হিসেবে কাজ করছে। তিনি চাঁদপুরকে মাদকমুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে বৃহৎ পরিসরে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

সর্বোপরি, সভায় উপস্থিত সকল কর্মকর্তাবৃন্দ মাদকের বিরুদ্ধে তাদের দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন।

Loading

শেয়ার করুন: