চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি

 

হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥

কয়েক দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সদর দপ্তরের (প্রধান কার্যালয়) সামনে অবস্থান নিয়ে চতুর্থ দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও জরুরী গ্রাহক সেবা সচল রেখে সমিতির প্রধান কার্যালয় ও জোনাল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মবিরতিতে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী ও বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সমূহে শোষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন অব্যাহত রাখা, গুনগত মানহীন মালামাল ক্রয় করে গ্রাহক ভোগান্তি বৃদ্ধি করার প্রতিবাদ এবং স্মার্ট ও টেকসই বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিআরইবি-পিবিএস একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন ও সকল চুক্তিভিত্তিকসহ অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিতকরণের দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন পালন করা হচ্ছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যানারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর এজিএম মুহাম্মদ ফারুক হোসেন, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুল ইসলাম, লাইন টেকনেশিয়ান মো. জহিরুল ইসলাম ও ফেরদৌস আহমেদ, মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার মো. সাইফুল ইসলাম ও ডা. মো. জালাল আহমেদ, বিলিং সহকারী শারমিন আক্তার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মিতু আক্তার প্রমূখ।

‘চুক্তি থেকে মুক্তি চাই’ উল্লেখ করে বক্তব্যে চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, এ পদে যারা স্থায়ী চাকুরী করছেন, তাদের সাথে একই যোগ্যতা ও একই প্রশিক্ষণে আমরা একই ধরনের কাজ করে যাচ্ছি। তাহলে আমরা বৈষম্যের শিকার কেন ? আমাদের নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা নেই, বেসিক নেই, গ্রার্চ্যুয়েটি নেই, অসুস্থতা ও মাতৃত্বজনিত ছুটিতে বেতন নেই, দূর্ঘটনায় তেমন কোন সহযোগিতাও নেই।
তারা অভিযোগ করে বলেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত একমাত্র প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক প্রায় ১২ কোটি। সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝড়বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগেও সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সমিতির তদারকি প্রতিষ্ঠান বিআরইবি দ্বৈত নীতির কারণে ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী।

এ সময় তারা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজের এবছরও ২’শ জন মারা গেছেন এবং বহু বিদ্যুৎকর্মী আহত হয়েছেন। কিন্তু উনাদের পরিবার তেমন কোন সহযোগিতা পায়নি। অথচ যারা স্থায়ী চাকরি করছেন, তারা সমিতির সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। অপর দিকে বিআরইবির অদক্ষতা ও নিম্নমানের সামগ্রীর কারণে হয়রানি ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে সবাই। বিতরণ লাইনে ব্যবহৃত নিম্নমানের মালামালের জন্য উত্তম গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না।

এ সময় দুই দাবি তুলে শ্লোগান দিতে থাকেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দাবি দুইটি হল, স্মার্ট ও টেকসই বিদ্যুৎব্যবস্থা বিনির্মাণে বিআরইবি-পিবিএস একীভূত করণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎব্যবস্থা সচল রাখতে এবং গ্রাহকসেবার মান উন্নয়নের জন্য সব চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে।

Loading

শেয়ার করুন: