নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, জনতার ন্যায্য লড়াইয়ের মধ্যে কোন ষড়যন্ত্র যেই করুক, জিততে পারবে না। পতিত শেখ হাসিনা সরকার বিগত ১৫ বছর ধরে জনগণের ঘাড়ের ওপর পা দিয়ে টিপতে বলেছে, বলেছে আরাম চাই।ওই দিন শেষ। এখন আমরা আমাদের মত করে বাঁচতে চাই। এর মধ্যে কোন ধরণের বিদেশি প্রভাব মানতে রাজি না। আমরা বিদেশের বন্ধুত্ব চাই, কিন্তু প্রভাব চাই না।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের কমিউনিটি সেন্টারে নাগরিক ঐক্য চাঁদপুর জেলার আয়োজনে মানবিক, গণতান্ত্রিক, কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার লক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে দেশে ৫২-৫৩ বছর ধরে মানুষের জীবনের কোন মূল্য ছিলনা, মানুষকে পাখিরমত গুলি করে হত্যা করা হত। তার জন্য অভিযোগও করা যেত না। দেশের কোটি কোটি টাকা প্রতি বছর পাচার হয়ে যেত। যেদেশের প্রধানমন্ত্রীর একজন পিয়ন ৪শ’ কোটি টাকা সম্পদের মালিক হয়েছিল এবং সেই কথা তৎকালীন নির্লজ্জ প্রধানমন্ত্রী গর্বের সাথে সবার সামনে বলতে পারতো, আমরা সেই দেশের বদল চাই।
তিনি আরো বলেন, যে দেশে বিচার নেই, মানুষের প্রতি মানুষের সম্মান নেই, ক্ষমতাসীন মানুষের বাহিরে কথা বলার অধিকার নেই, সেরকম দেশ চাই না। সেদেশ আমরা বদলে দিব। আর সেজন্য আমাদের লড়াই হয়েছে এবং আমরা জিতেছিলাম। আমাদের মনের মধ্যে অফুরন্ত দেশ প্রেম ও ভালোবসা ছিল এবং আমাদের প্রত্যয়ছিলো দেশকে বদলাবো। যে লড়াই সে সময় ছিলো, আজও চলছে। কিন্তু নাগিনীর বিষ নিঃশ^াস প্রতিবেশী দেশ থেকে এখনো আসছে। সে একজন পলাতক আসামী। কোন এক সময় ক্ষমতা জোর করে দখল করে রেখে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী জাহির করেছেন।
মান্না বলেন, শেখ হাসানি সেখানে বসে উস্কানি দিচ্ছে-আজকে মিছিল কর, কালকে বিক্ষোভ কর, পরশু দিন নিজেদের বুকের মধ্যে ট্রাম্পের ছবি লাগিয়ে সবার সামনে গোলযোগ তৈরী করো। পুলিশ যদি তোমাদের ওপর লাঠি চার্জ ও গুলি করে যাতে ট্রাম্পের ছবি দেখা যায়। কত নীচ হলে সে এরকম কাজ করতে পারে।
এই নেতা বলেন, আমরা বলেছিলাম, শেখ হাসিনা একজন পলাতক আসামী। ভারত যদি আমাদের বন্ধু দেশ হয়। তাহলে তাকে আশ্রয় দিতে পারে না। তবুও তারা আশ্রয় দিয়েছে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুছ বলেছেন-যদি তোমরা তোমাদের দেশে তাকে রাখ, তাহলে তাকে তার মুখ বন্ধ করে রাখতে বল। কথা যাতে না বলে। কিন্তু সেখানে বসে তিনি বলছেন কিশোর গ্যাংরা আমাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। ১৭ লাখ নয়, ১৮ কোটি মানুষ লড়াই করে তাকে উৎখাত করেছে। উনি সেই লড়াইকে ছোট করে দেখছেন। একেবারে পাষন্ড ও সীমারের মত তিনি মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছেন। তার জন্য শেখ হাসিনা, তার দলের লোক ও দোসরদের কারো মধ্যে এতটুকু অনুশুচনা ও অনুতাপ দেখাননি।
তিনি বলেন, ভারত কতদিন শেখ হাসিনাকে তাদের দেশে রাখতে পারে, আমরা তা দেখবো। আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমরা মামলা করছি। ওই মামলা গ্রহণ করার পরে, ওই আদালত যখন ভারতকে বলবে ওই আসামী আপনাদের দেশে আছে, তাকে ফেরৎ দিয়ে দিন। তখন মোদি সাহেবের ক্ষমতা হবে না শেখ হাসিনাকে ধরে রাখার।
নাগরিক ঐক্য চাঁদপুর জেলার সমন্বয়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন কাননের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক রাজার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন, নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাক্ষারুল ইসলাম নবাব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর কাদের, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিমুল্লাহ সেলিম প্রমূখ।